রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ২৪ জুন, ২০২২

প্রেমের কারণে কলেজছাত্রকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রেমিককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকার পরিবারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, নির্যাতনের একপর্যায় ওই প্রেমিকের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে।

নির্যাতনের শিকার ওই প্রেমিকের নাম ফয়সাল প্যাদা (১৮)। তিনি সদর ইউনিয়নের উনিশ নম্বর গ্রামের ফজলু প্যাদার ছেলে এবং রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর কাজির হাওলা গ্রামে গত বুধবার এ ঘটনা ঘটে। বুধবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন প্রেমিকার ভাই মামুন হাওলাদার (২২) ও চাচা রিয়াজ হাওলাদার (৩৫)। তাদের বাড়ি সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাজির হাওলা গ্রামে।

স্থানীয়রা জানান, কলেজপড়ুয়া ফয়সালের সঙ্গে একই ইউনিয়নের দক্ষিণ কাজির হাওলা গ্রামের খবির হাওলাদারের মেয়ে কাছিয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আনিশার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ ঘটনা দুই পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হয়ে আনিশার পরিবার পরিকল্পিতভাবে ফয়সালকে শারীরিক নির্যাতন করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আনিশার বাবা খবির হাওলাদার নিজের মেয়েকে ফয়সালের হাতে তুলে দেবেন জানিয়ে মুঠোফোনে তাদের বাড়িতে ডেকে আনেন ফয়সালকে। এতে ফয়সাল মনের আনন্দে আনিশাদের বাড়িতে ছুটে যায়। কিন্তু পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে আটক করে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন আনিশার বাবা ও পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে তার মাথার তালুর চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। এ সময় তার মাথায় আলকাতরা লেপ্টে দেওয়ারও চেষ্টা করেন নির্যাতনকারীরা। খবর পেয়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ফয়সালকে উদ্ধার করে পুলিশ। এজাহারের তথ্যানুযায়ী, টানা সাত ঘণ্টা তাকে নির্যাতন করা হয়।

পুলিশ জানায়, ফয়সালকে নির্যাতনের ঘটনায় তার মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে খবির হাওলাদারের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলার কথা জানার পর আনিশার বাবা আত্মগোপনে চলে যান।

এদিকে, ফয়সালের মা আকলিমা বেগম বলেন, ‘খবির হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার মাথার চুল কামানো (ন্যাড়া)। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তারা আমাকেও মারধরের হুমকি দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে পুলিশের সাহায্য চাইলে তারা এসে আমাদের উদ্ধার করে।’

নির্যাতনের শিকার ফয়সাল প্যাদা বলেন, আমাকে মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলে। পানি ছিটিয়ে উঠানোর পর আবার মারে। মাথা কামিয়ে দেয়। আলকাতরাও দিতে চায়।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close