আদিল হোসেন তপু, ভোলা

  ২০ জুন, ২০২২

দৌলতখান উপজেলার ৫০নং হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

নদীতে স্কুল বিলীন : মাঠে পাঠদান

ভোলার দৌলতখানের হাজিপুর ইউনিয়ন নদী ভাঙ্গনের কারণে ওই ইউনিয়নের ৫০নং মধ্য হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হয়ে গেছে এক বছর আগেই। ফলে স্কুলটি স্থানন্তীর করে আনা হয় মূল ভূখন্ডে। কিন্তু নতুন জায়গায় স্কুলের ভবন না থাকায় ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষকরা চরম বিপাকে রয়েছে। খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাশ করতে হচ্ছে। এতে করে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। এলাকার শিশুদের শিক্ষার মানউন্নয়নে দ্রুত একটি পাকা ভবন নির্মানের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। আর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্কুলটির নতুন ভবনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

ভোলার দৌলতখান উপজেলার ৫০নং হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নিজস্ব ভবন না থাকায় এক রকম ভাসমান উপায়ে চলেছে পাঠদান। গত বছর নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বিদ্যালয়টি। ৩তলা ভবনের পুরটাই মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গনের স্বীকার হয়।

এর পর বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দৌলতখানের চরখলিফা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে গত ৩-৪ মাস আগে একজন শিক্ষানুরাগী ব্যবসায়ী জমি অনুদান করলে একটি ছাপরা এক চালা টিন দিয়ে ওই বিদ্যালয়টিকে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তুু এক কক্ষ বিশিষ্ট বিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রীদের সংকুল্যান হয় না। তাই খোলা আকাশের নিচে

প্রচন্ড গরমে রোদেপুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে

তাদের ক্লাশ করতে হয়।

বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আনহা, সুরাইয়া, নয়ন, শাহীনসহ আরো অনেকে জানায়, বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় আমাদের পড়াশোনা করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কারন রোদে পুড়তে হয়। আর বৃষ্টি আসলে ভিজতে হয়। এখন স্কুলের মাঠে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। বৃষ্টি আসলে একটা ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে সবাইকে গাদাগাদি করে বসতে হয়। অনেক সময় বৃষ্টি আসলে শিক্ষকরা তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দেয় আমরা বাড়িতে চলে যেত হয়। এতে আমাদের পড়াশোনার অনেক বিঘœ হচ্ছে। আমরা যাতে সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে পাড়ি তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে একট ভবন চাই।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক সজল কুমার মজুমদার বলেন, গত বছর নদী ভাঙ্গনের ফলে পুনরায় চর খলিফা ইউনিয়নে এনে বিদ্যালয়টি স্থাপন করি। কিন্তু অবকাঠামোর না থাকার কারণে আমরা শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দিতে ব্যাহত হচ্ছে। একসঙ্গে কয়েকটি শ্রেনী কক্ষের পাঠদান একসাথে হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনা ঠিক মতো মনোযোগ দিয়ে করছে না।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রহমান বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯২০ সালে নলডুগি বৈকুণ্ঠপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিদ্যালয়টি ১০২ বছরের পুড়ানো প্রতিষ্ঠান। সরকারি ভাবে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩তলা বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মান করা হয়। কিন্তুু মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে ভবনটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়টি স্থান্তর হওয়ার পর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। পরে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বাচ্চু চর খলিফা ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ডে স্কুলের নামে ১৬ শতাংশ জমি কিনে দিলে প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় এখানে স্থাপন করা হয়। এখন ভবনের অভাবে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় একটি কক্ষ থাকলেও তাতে ক্লাশ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য সুন্দর পরিবেশ আমরা দিতে পারছি না।

শিক্ষার্থীদের মাল্ডিমিডায় ক্লাশও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষারমান উন্নয়নে ছাত্রছাত্রীদের

দ্রুত এই বিদ্যালয়টির জন্য একটি পাকা ভবন প্রয়োজন।

দৌলতখান উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: হোসেন বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারণে চরঞ্চল বিদ্যালয়টি স্থানন্তর করে মূল ভূগন্ডের চর খলিফা ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছে। এখন এখানে একটি মাঠের এক কোনায় কোন রকম পাঠদান করছে শিক্ষকরা। আমরা এই বিদ্যালয়ের জন্য একটি ভবন করে দেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

ইউএনও মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ভবনের জন্য স্থানীয় এমপির সাথে কথা বলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানানো হবে। দ্রুত এই বিদ্যালয় যেন একটি ভবন নির্মান করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close