তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

  ১৯ জুন, ২০২২

হারিয়ে যাচ্ছে বিচিকলা

হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় প্রজাতির বিচিকলা। কাঁচা অবস্থায় তরকারি, পাকা কলা দিয়ে সুস্বাদু পায়েস রান্না এমনকি অতিথি আপ্যায়নেও বিচিকলার কদর ছিল গ্রামে। দেশীয় প্রজাতির এমন সুগন্ধি ও সুস্বাদু কলা দ্বিতীয়টি নেই! কিন্তু আধুনিক বাণিজ্যিক কৃষিতে তথাকথিত উচ্চফলনশীল বা উফসী জাতের দৌরাত্ম্যে কোণঠাসা দেশীয় জাতের ফল ও ফসল। এমনকি ঐতিহ্যবাহী অরগানিক চাষপদ্ধতিও ভুলতে বসেছে মানুষ। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, নতুন প্রজন্মের অনেকেই বিচিকলা কখনো দেখেনি।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সদরের প্রবীণ ব্যক্তি আনার আলী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় কলাগাছের জুড়ি ছিল না। একসময় ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে ঘরবাড়ি রক্ষা করতে মানুষ বিচিকলাগাছ রোপণ করত। এই গাছের গুণাবলি বলে শেষ করা যাবে না! বিচিকলা কাঁচা থাকতে তরকারি আর পেকে গেলে সুগন্ধযুক্ত ও অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। কাঁচা কলা ইলিশ মাছের সঙ্গে রান্না করলে দারুণ তরকারি হয়। বিচিকলা আর ইলিশ মাছের তরকারির স্বাদই ছিল আলাদা!’

আনার আলী আরও বলেন, ‘ঈদ-পার্বণে অতিথি আপ্যায়নেও বিচিকলার কদর ছিল। চালের গুঁড়ার সঙ্গে পাকা বিচিকলা ও গরুর দুধ মিশিয়ে পায়েস (নোম) তৈরি করলে অমৃত লাগে!’

প্রতিবছর কৃষিমেলার সময় হারিয়ে যাওয়া এই দয়াকলা (বিচিকলা) প্রদর্শনী করলে নতুন প্রজন্ম এ দেশি ফল চিনতে পারবে এবং এই প্রজাতি রক্ষায় এগিয়ে আসবে বলে মনে করেন তালার শাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা কাদের শেখ।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, ‘প্রকৃতির নিয়মে এবং হাইব্রিডসহ নানা উন্নত জাতের কলা জাতের আগমনে এই দেশীয় প্রজাতির বিচিকলা হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যেতে বসা এই স্থানীয় প্রজাতির বিচিকলাকে বাঁচাতে এবং বিস্তার লক্ষ্যে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র কাজ করলে এটি আবার বিস্তার লাভ করবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close