এইচ আর তুহিন, যশোর
মহাসড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং
যশোরের মণিহার চত্বর থেকে খাজুরা বাসস্ট্যান্ড
মাসের পর মাস ব্যস্ততম মহাসড়ক দখল করে রেখেছে বিভিন্ন রুটের বাসসহ নানা রকম যানবাহন। রাস্তার দুই ধারসহ মাঝের সিংহভাগ সড়ক দখল করে পার্কিং করে রাখা হয় এসব গাড়ি। ফলে ওই সড়কে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে বিঘœ হচ্ছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। প্রায় ২৪ ঘণ্টাই মহাসড়কের ওপর গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর গোটা এলাকা পরিণত হয় এক বাসস্ট্যান্ডে। সারারাত মহাসড়কের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে বাস-ট্রাক পার্কিং করে রাখা হয়। বলছিলাম যশোরের মণিহার চত্বর থেকে খাজুরা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়কের কথা। দুদিনের সরেজমিনে একই চিত্র দেখা যায়।
স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা জানান প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যশোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলো যাত্রীদের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। পরে যশোর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মণিহার চত্বর থেকে খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকার মহাসড়ক দখল করে বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়।
টায়ার ব্যবসায়ী কাওছার আহমদ জানান খাজুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে মনিহার এলাকার সড়কের মাঝখানে দখল করে থাকে আঞ্চলিক দূরপাল্লার বাস, ট্রাক ও পিকআপগুলো। সকাল-সন্ধ্যায় মহাসড়কের মাঝখানের এক পাশ দখল করে পার্কিং করে রাখে। ফলে চলাচলের রাস্তা সংকুচিত হয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দেখা দেয়। সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। মহাসড়ক থেকে বাস পার্কিং উঠিয়ে দেওয়া জরুরি।
অপরদিকে স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তাটি চারলেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে দীর্ঘ দুই বছর ধরে খুড়ে ইটের খোয়া বিছিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে একদিকে ধুলো অন্য দিকে বৃষ্টি হলে রাস্তায় হেঁটে পার হওয়ার মতো অবস্থা থাকে না।
ঈগল পরিবহনের চালক খোকন জানান, ঢাকা রোড থেকে খাজুরা পর্যন্ত গাড়ি চালাতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠি। গর্তের মধ্যে চাকা পড়লে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখা খুব মুশকিল হয়ে যায়। এরপর সড়কের উপর গাড়ি পার্কিং যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
খানাখন্দে ভরা মহাসড়কে বছর দুয়েক আগে সংস্কার কাজ শুরু হলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন যশোরের ঢাকা রোডস্থ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেই সংস্কার কাজই এখন তাদের কাল হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থান খোঁড়াখুড়ি করে ফেলে রাখা হয়েছে দিনের পর দিন। যার প্রভাবে এলাকা এখন ‘ধুলোর সাগর’। ইতিমধ্যে এর থেকে নিস্তার পেতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধও করেছেন। তবে সমস্যার সমাধান মেলেনি। প্রকারন্তে দিন দিন বাড়ছে।
যশোর ট্রাফিকের ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান বলেন, রাস্তার উপর গাড়ি পার্কিং অবশ্যই অবৈধ। বেশ কয়েকবার ওই সব চালককে সতর্ক করেছি। তাছাড়া রাস্তা ভাঙা চোরা রয়েছে। রাস্তা সম্পূর্ন মেরামত হওয়ার পর গাড়ি পার্কিং করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ধুলোর কারণে স্থানীয়দের সমস্যার কথা বিবেচনা করে সড়কে পানি দেওয়া হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কার্যাদেশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছি। তখন কাজ আবার শুরু হবে।’
"