নওগাঁ প্রতিনিধি

  ১৭ মে, ২০২২

নওগাঁ সদর হাসপাতাল

ডায়রিয়ার প্রকোপে বেড সংকট

নওগাঁয় হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়ষ্কদের সংখ্যাই বেশি। ভ্যাপসা গরম, আবহাওয়া পরিবর্তন ও অধিক উষ্ণতা ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারন বলে মনে জানান চিসিৎকরা। সদর হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে পাঁচ গুণেরও বেশি রোগী ভর্তি আছেন। বেড খালি না থাকায় অনেক রোগি মেঝেতেই সেবা নিচ্ছেন। বাড়তি খরচের কথা ভেবে অনেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরাই সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্র মতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বয়ষ্ক।

নওগাঁ সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড মিলে মোট ৮৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ২৪ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ২১ জন এবং পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৪৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হয়ে নতুন করে ভর্তি ৩৮ জন। শিশু ও পুরুষ ওয়ার্ডের ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ।

পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন সদর উপজেলা শৈলগাছি গ্রামের বাসিন্দা বিরেন্দ্র চন্দ্র দাসের স্ত্রী বেনিতা রানি দাস বলেন, হঠাৎ করে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমার স্বামীর পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বেলা ১২টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। গত কয়েকদিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। বেডে কোন জায়গা না পেয়ে মেঝেতে স্বামীকে নিয়ে আছি। তবে আগের চেয়ে এখন একটু সুস্থ্য।

মহাদেবপুর উপজেলার উত্তর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, গত রবিবার বিকেলে খাবার খাওয়ার পর থেকেই পাতলা পায়খানা আর বমি হচ্ছিল। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপালে ভর্তি হয়েছি। এখন কিছুটা সুস্থ্যতা অনুভব করছি।

শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া ৭ বছরের শিশু আফিয়া খাতুনের বাবা আয়নাল হোসেন, গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে আমার সন্তানের পেটে সমস্যা হয়। বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। তার পর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করায়। কিন্তু এতো রোগি যার কারনে কোন বেড না পাওয়ায় মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ ফরহানা আক্তার বলেন, গত দুই-তিন দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। রোগীদের সামলাতে গিয়ে নিজেদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে যে সব শিশু ভর্তি হয়েছে তাদের বেশির ভাগই খাবার এর সমস্যার কারণে অসুস্থ হয়েছে বলে স্বজনরা বলছেন। তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড মিলে মোট ৮৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ২৪ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ২১ জন এবং পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৪৮ জন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিরের মেডিকেল অফিসার ডা. আশিষ কুমার সরকার বলেন, নওগাঁয় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ডায়রিয়া হলে প্যাকেট স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার যেমন ডাবের পানি, চিড়ার পানি ও ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুঁড়ার জাউ খাবার খাওয়ানো যেতে পারে। এছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার বারবার খেতে দিতে হবে। ডায়রিয়ার মাত্রা বেশি হলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close