শখের বসে রঙিন মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রাশেদ শাহরিয়ার রিফাত নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা। পড়াশোনার পাশাপাশি রঙিন মাছ চাষ করে জীবন রাঙাচ্ছেন তিনি। বাহারি রঙের মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। এই রঙিন মাছ বাসাবাড়ির অ্যাকুরিয়ামে শোভা পেয়ে থাকে। ছোট-বড় এই মাছ গুলো দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সাড়ে ছয় বছর আগে ছয় হাজার টাকা নিয়ে শখ করে মাছ পালন করেন। আর এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন এ মাছ। জেলার বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীরা তার কাছে থেকে পাইকারি ক্রয় করেন।

জানা গেছে, রিফাত উপজেলার কুড়াগাছা ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামের অ্যাড. এম এ রশীদের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইল টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেছেন। স্যানেটারীর পাটে লাল, নীল, কমলা, কালো, বাদামি, হলুদ রঙের মাছের ছড়াছড়ি। পানিতে ভাসছে, ডুব দিচ্ছে ছোট-বড় নানা রঙের মাছ। বর্ণিল মাছ দেখলে চোখ জুড়ানো সহ মন ভরে যায়। প্রায় ২৮ প্রজাতির মাছ রয়েছে তাঁর খামারে।

রিফাত বলেন, আমি ২০১৬ সালের প্রথমে রঙিন মাছ গুলো ঢাকা থেকে শখের বসে নিয়ে এসেছিলাম। সাড়ে ছয় বছর আগে ৬ হাজার টাকা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। কয়েক মাস চাষ করার পর দেখি মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তখন রঙিন মাছ বিক্রির চিন্তা করি। প্রথমে উপজেলার বিভিন্ন দোকানে মাছ বিক্রি শুরু করি। এখন জেলার বিভিন্ন উপজেলার দোকানে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকার রঙিন মাছ বিক্রি হয়। আমার কাছে ২৮ প্রজাতির রঙিন মাছ রয়েছে। প্রতিটি রঙিন মাছ ২০-১২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। সাতটি স্যানেটারী পাটে ও দুইটি হাউজে রঙিন মাছ চাষ করা হচ্ছে। প্রতিটি স্যানেটারী পাটে ১০০০-১২০০ রঙিন মাছ রয়েছে। আর হাউজে রয়েছে বড় রঙিন মাছ। মাছের জন্য দুই বেলা সকাল ও বিকেলে ভাসমান ফিড খাওয়াতে হয়। খাবার বাবদ প্রতি মাসে ১৬ হাজার টাকার খরচ হয়। মাছের ইঞ্চি ধরে এই মাছগুলো বিক্রি করা হয়। এই মাছ গুলো এখন দুইটি পুকুরেও চাষ করছি। এ পর্যন্ত আমার সাড়ে ছয় লাখ টাকার মতো লাভ হয়েছে। রঙিন মাছ চাষ করে কখনও ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। তারা আয়ের মুখ দেখবে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানান, রিফাত আমাদের তালিকাভূক্ত একজন মৎস্য চাষী। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাকে কারিগরি ও প্রযুক্তিগতভাবে সহযোগিতা করে আসছি। এ মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি করার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর থেকে তাকে মৎস্য ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। নতুন কোনো উদ্যোক্তারা যদি রঙিন মাছের চাষাবাদ করতে আগ্রহী থাকে তাহলে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

"