নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

  ১২ মে, ২০২২

শ্রমিক সংকটে দিশাহারা কৃষক

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে চলতি বোরো মৌসুমে ১৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকদের পরিচর্যায় মাঠের ধান পেকে গেছে। সোনালি বর্ণে আর শিষে ধানগুলো কৃষকের উঠানে যাওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু অধিকাংশ মাঠের ধান এখনো জমিতে পড়ে আছে। একদিকে ঘূর্ণিঝড়ের খবরে মহাবিপাকে কৃষক। অন্যদিকে শ্রমিক সংকটেও রয়েছেন দিশাহারা। যদিও বাজারে নতুন ধানের দাম ৯০০ টাকা আর একজন শ্রমিকের দিন মজুরিও ৯০০ টাকা।

সরেজমিনে বাংগড্ডা ইউপির রামারবাঘ, কাদবা, রায়কোট উত্তর ইউপির রায়কোট, মাহিনী, দৌলতপুর, মৌকরা ইউপি গোমকোট, মাঝিপাড়া, মৌকরা, পেরিয়া ইউপির মাধবপুর, পেরিয়া, আশারকোটা, শ্রীফলিয়াসহ উপজেলার প্রায় গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠে গিয়ে দেখা যায় ধান কাটার কাজে তেমন শ্রমিক নেই। প্রান্তিক চাষি ও বর্গা চাষিরা নিজের ধান কাটায় ব্যস্ত।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে এ চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনো কোনো জমিতে শতকপ্রতি এক মণ করে ধান হয়েছে। এরই মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। আবার কোনো কোনো জমিতে ৯০ ভাগ ধান পেকেছে। মহামারি আকার দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। প্রতি শ্রমিক দিন প্রতি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা করে তাদের মজুরি নিচ্ছেন। তারপরও ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে কাড়াকাড়ি। কে কার আগে নিয়ে ধান কাটাবে। ধান মাঠে পড়ে থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না। শুধু আকাশটা খোলসা পাওয়া দরকার।

এ বিষয়ে তালেচৌ গ্রামের কৃষক সাগর জানান, এবার চার একর জমিতে বোরো আবাদ করছেন। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। ধানখেতে গেলে মন ভরে যায়। প্রায় সব ধান একসঙ্গে পাকতে শুরু করেছে। শ্রমিকের অভাবে সময়মতো ধান কাটতে পারছেন না তিনি। সামান্য কিছু ধান কেটেছেন নিজেই। বোরো মৌসুমে খরচ অনেক বেশি। এবার শতকপ্রতি খরচ পড়বে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। বিষ্ণুপুর গ্রামের মোহন জানান, জমিতে ধান পেকে মাথা গুজে গেছে। শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছি না। কী করব আকাশে মেঘ দেখলে মনের ওপর চাপ পড়ে। তাই দিশাহারা হয়ে নাঙ্গলকোট বাজার থেকে ৯০০ টাকা করে চারজন শ্রমিক এনেছি ধান কাটার জন্য।

কাদবা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, মেঘ দেখলে মনে ভয় আসে। ধান কাটার জন্য সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হয়। তারা প্রতি একর ধান চুক্তিতে কাটে ১২-১৩ হাজার টাকা। একটু বৃষ্টি হলে চলে যায় ১৫ হাজার টাকায়। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জালা অঞ্চলের ধানগুলো আগে কাটা হয়েছে। শ্রমিক সংকট দূর করার জন্য হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আর প্রতিটি কৃষি মাঠে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তদারকি করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close