বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ১২ মে, ২০২২

বাউফল মুক্তিযোদ্ধা অডিটোরিয়াম

রাত হলেই বসে মাদক-জুয়ার আড্ডা

অযত্ন-অবহেলা আর দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ধ্বংসের পথে পটুয়াখালীর বাউফল পৌর শহরে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা অডিটোরিয়াম। বর্তমানে জুয়া আর মাদকের আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত এই অডিটোরিয়াম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদার শহীদ জিয়া অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টারের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর থেকেই বাউফলের যেকোনো বড় ধরনের রাজনৈতিক সভা বা সেমিনার কিংবা বড় অনুষ্ঠান এই অডিটোরিয়ামে হতো। তবে অডিটোরিয়ামের এই জাঁকজমকপূর্ণ অবস্থা বেশিদিন স্থায়ী ছিল না। এক পর্যায়ে অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সময়ে দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যায় শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ছিল সেই দাবিতে অডিটোরিয়ামের নাম পরিবর্তনের দাবি জানায় স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীরা। তখন শহীদ জিয়া অডিটোরিয়ামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মুক্তিযোদ্ধা অডিটোরিয়াম। এরপরে সরকারি কোনো অনুষ্ঠান ও কাজ ব্যতীত ব্যবহৃত হতো না অডিটোরিয়ামটি। কিন্তু স্থানীয় কিছু মাদকসেবীর অডিটোরিয়াম দখলের পাঁয়তারা এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে আজ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসের পথে অডিটোরিয়ামটি।

দেখভাল করার মানুষের অভাবে ২০১৩ সালের পরে অডিটোরিয়ামের চেয়ার-টেবিল, ফ্যান-লাইটসহ যাবতীয় মালামাল ধীরে ধীরে চুরি হতে থাকে, চুরি হয়ে যায় সব মালামাল। চোরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি অডিটোরিয়ামের গেটের রড এবং জানালার গ্রিলও। বর্তমানে চারপাশের দেয়াল, ভাঙা দরজা, জানালা ব্যতীত আর কিছুই নেই। সব ধরনের অনৈতিক কাজের জন্য এখন উন্মুক্ত হয়ে গেছে অডিটোরিয়াম। রাত কিংবা দিন প্রতিদিন বসে জুয়া আর মাদকের আসর। প্রশাসনের নজরদারি না থাকার কারণে বর্তমানে মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে এই অডিটোরিয়াম। অডিটোরিয়ামের মেঝে ও বিভিন্ন কক্ষ সিগারেটের প্যাকেট আর মাদক গ্রহণের সরঞ্জামে পরিপূর্ণ। অন্যদিকে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা চালায় এই অডিটোরিয়ামে।

স্থানীয়রা জানান, কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে আজ অডিটরিয়ামের এই নাজেহাল অবস্থা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি সঠিক তদারকি করত, তাহলে এ অবস্থা হতো না। অডিটোরিয়ামটিকে পুনরায় সংস্কার করে এবং সঠিকভাবে দেখভাল করা হলে জনগণ এতে প্রয়োজনীয় কাজে অনুমতি ক্রমে ব্যবহার করতে পারবে এবং এর সুবিধা পাবে।

এ প্রসঙ্গে বাউফল ইউএনও মো. আল-আমিন জানান, এটা জেলা পরিষদের বিল্ডিং, এটির দায়িত্ব তাদের। তবে জুয়া ও মাদকের আড্ডা বন্ধ করতে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান মোহন বলেন, ‘সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের তত্ত্বাবধানে আমরা সংস্কারের জন্য একটি অর্থ বরাদ্দ চেয়েছি। বর্তমানে সেটি কতদূর এগোল সে বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার বলতে পারবে। মাদকের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের।’

জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান মিয়া জানান ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা একটি বাজেট করে এমপির (পটুয়াখালী-২) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close