মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

  ১১ মে, ২০২২

অভিযানেও থামছে না মাটি কাটা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি কমে গেলে বেপরোয়া হয়ে উঠে অসংখ্য প্রভাবশালী চক্র। অভিযান, জরিমানা হলেও থেমে থাকেনা এই মহাযজ্ঞ! কে শোনে কার কথা। অবাধে মাটি কাটায় পরিবর্তন হচ্ছে নদীর গতিপথ, হুমকির পড়ছে বিভিন্ন সেতু, বাঁধ, কৃষি জমি ও পাহাড়ি অঞ্চল। মাটি নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ড্রাম ট্রাকেও প্রাণ হারিয়েছে তিনজন।

সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার লতিফপুর-চাঁনপুর, বহুরিয়া-চান্দুলিয়া সংলগ্ন লৌহজং নদী ও বংশাই নদীর দুই পাড়ে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যেই চলছে সব। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রভাবশালী অসংখ্য মহল জড়িত এর সাথে। প্রতিনিয়ত দিনে-রাতে অবাধে কাটা হচ্ছে নদীর দুই পাড়ের মাটি। এতে হুমকির মুখে বাঁধ-সেতু। সাথে নদীর গতি পথ পরিবর্তনের শঙ্কাও রয়েছে। পাশাপাশি থেমে নেই বাংলা ড্রেজারেরও তেলেসমাতি। বাংলা ড্রেজার দিয়েও সমানতালে অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। নদী থেকে বালু মহাল আইনকে উপেক্ষা করেই অবৈধ এ ব্যবসা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালু চক্র।

খবর পেয়ে মাঝে মধ্যেই অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন। হয় জরিমানা, তবুও থেমে থাকেনা এই মাটি খেকোরা। মির্জাপুর উপজেলার দুই পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বংশাই ও লৌহজং নদী। তাই নদী রক্ষায় জোড়ালো পদক্ষেপ চেয়েছেন স্থানীয়রাও। এদিকে পরিবেশ ও নিয়মণ্ডনীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে পাহাড়ি টিলা কাটারও মহোৎসব। প্রশাসনের জোড়ালো তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই বলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। অন্যান্য বছরের মতো এবারও চলছে লাল মাটি কাটা। উপজেলার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় চলছে অবৈধ এই কর্মযজ্ঞ। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, সরকারি রাস্তা ও বিসিক সংস্থার নাম ভাঙিয়ে বসতবাড়ি, দোকানঘর ও ইটভাটার জন্য পাহাড় কেটে মাটি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ঝুঁকিও। কেননা পাহাড় কেটে ফেলায় বর্ষা মৌসুমে প্রাণহানির মতো ঘটনার আশঙ্কাও অনেক বেশি। উপজেলার কয়েকটি স্থানে সরকারি কাজে মাটি ব্যবহার হলেও সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের নাম ভাঙিয়েও এই ব্যবসা করছেন অনেকে। মাটি ব্যবসায়ীরা এতোটাই বেপরোয়া ও প্রভাবশালী, যাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। মুখ খুললেই হামলা-মামলার ভয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে বলার মতোও যেনো কেউ নেই। এদের থেকে দ্রুত মুক্তি চায় এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে ইউএনও হাফিজুর রহমান বলেন, অবৈধ মাটি-বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করা হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close