জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)

  ১০ মে, ২০২২

কেশবপুরে আপারভদ্রার ক্রসবাঁধ

নির্মাণের সাত দিনেই নদীতে বিলীন

যশোরের কেশবপুরে আপারভদ্রা নদীর মুখে ক্রসবাঁধ নির্মাণের এক সপ্তাহের মধ্যেই তা ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত ১৫ দিন ধরে বাঁধ দিয়ে নদীতে পলি ঢুকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় আজও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এরফলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য খনন করা নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন নদী, খাল খনন প্রকল্পের সুফল বঞ্চিত এ জনপদের লক্ষাধিক মানুষ। পলি ঠেকাতে বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের দাবি এলাকাবাসির।

জানাগেছে, আশির দশকের পর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আপারভদ্র, হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদী পলিতে ভরাট হয়ে মরতে শুরু করে। যার কারণে কেশবপুর শহরসহ মনিরামপুর উপজেলা অধিকাংশ এলাকায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে দেখা দিত স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ সমস্যা নিরসনে উপজেলার কাশিমপুরে আপারভদ্রা নদীর মুখে প্রতিবছর সাময়িক ক্রসবাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে কেশবপুর শহর জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ওই স্থানে ক্রসবাঁধ দেওয়া এবং জুনের শেষের দিকে তা অপসারণ করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। নদী রক্ষায় ধারাবাহিকভাবে প্রকল্পটি চলমান রয়েছে।

২০১৮ সালে ৩ বছর মেয়াদে কেশবপুরের আপারভদ্রা, হরিহর, বুড়িভদ্রা নদীসহ এর সংযোগ খালগুলো প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। পলি ঠেকাতে প্রতি বছরের ন্যায় আপারভদ্রা নদীর মুখের ক্রসবাঁধের নির্মাণ কাজ ১৫ এপ্রিল ঠিকাদার সম্পন্ন করে। ৫-৭ দিন যেতে না যেতেই বাঁধটি ভেঙে যায়। দীর্ঘ ১৫ দিনেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

পাউবোর অফিস জানায়, কাশিমপুরে আপারভদ্রার মুখে ক্রসবাঁধ দেয়ার জেন্য ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় যশোরের ঠিকাদার আনন্দ কুমারকে। তিনি ১ এপ্রিল কাজ শুরু করে ১৫ এপ্রিল শেষ করেন। জোয়ারের পানির চাপে বাঁধটি ভেঙে যায়। ঠিকাদার আনন্দ কুমার বলেন, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ঈদের কারণে বাঁধের নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। ২-৩ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

কাশিমপুর গ্রামের কৃষক শামিম হোসেন বলেন, ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত সাগরের পলি নদীতে আসা শুরু হয়। ওই ঠিকাদার টেকসই পাইলিং ও পরিমান মত পলিব্যগ ব্যবহার না করায় বাঁধটি ভেঙে গেছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না হওয়ায় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সি আছাদুল্লাহ বলেন, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠিকাদারকে বাঁধটি দ্রুত নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার মেরামতের কাজ করছে। বর্তমান আমি ছুটিতে আছি। বিস্তারিত জনতে ঠিকাদারের সাথে কথা বলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close