টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

‘বিষমুক্ত সবজি আবাদে’ কৃষকের অভাব দূর

সারা বছরই সকাল-সন্ধ্যা লাঙল, কোদাল আর কাস্তে নিয়ে মাঠে ঘোরাঘুরিই কৃষকের নিত্যদিনের কাজ। বছরজুড়ে বিভিন্ন রকম সবজি আবাদ করে দিনবদল হয়েছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের কৃষকদের। এ গ্রামটি ‘বিষমুক্ত নিরাপদ সবজির গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। সবজির আবাদে ভালো দাম পাওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখাও করছেন তাদের সন্তানরা। বিষমুক্ত সবজি আবাদ হওয়ায় উপজেলা-জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। শুধু মুশুদ্দি ইউনিয়নে ১০৩ হেক্টর জমিতে। সবজি আবাদের জন্য নারী ও পুরুষরা মাঠে সমভাবে কাজ করেন। প্রণোদনা, পরামর্শ ও বিভিন্ন প্রদর্শনীতে কৃষকদের আগ্রহতে বেড়েই চলছে এ আবাদ।

সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকরা সবজি আবাদের পাশাপাশি কিছু জমিতে ধান চাষ করেন। বছরজুড়েই লাউ, মিষ্টিকুমড়া, করলা, শিম, শসা, চিচিংগা, রবরটি, ঢ্যাঁড়স, পুঁইশাক, লাউশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন রকম সবজি পর্যায়ক্রমে একের পর এক আবাদ হচ্ছে। দেশের ১০টি মডেল সবজি গ্রামের মধ্যে মুশুদ্দি একটি। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার দিয়ে আবাদ করা হয়ে এ সবজি। পোকা দমনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে সেক্স ফেরোমিও ও আলোর ফাঁদ। কম্পোস্ট ও জৈব সার ব্যবহারে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠছে সবজি গাছ। বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা এ সবজি ক্রয় করে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় পাইকাররাও সবজি ক্রয় করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।

কামারপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক মিয়া বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে একের পর এক বিভিন্ন জাতের সবিজ আবাদ করি। এবার ৭৫ শতাংশ জমিতে শিম, লাউ, বেগুন, করলা ও পটোল আবাদ করেছি। সব খরচ বাদে প্রতি বছর আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা আয় থাকে। মেয়েকে অনার্সে পড়ালেখা করাচ্ছি।’

অপর কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কৃষক দল গঠন করে এখানে সবজি আবাদ করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কর্মকর্তারা মাঠে এসে সব পরামর্শ দিচ্ছেন।’

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী আবদুল কাদের বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে মুশুদ্দি বাজারে থেকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে বিষ ও রাসায়নিক সারমুক্ত সবজি ক্রয় করে ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠাই।’

মুশুদ্দি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া বলেন, ‘কৃষকরা বছরজুড়ে সব ধরনের সবজি আবাদ করেন। মাঠে গিয়ে সব সময় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি আবাদ করছেন কৃষকরা।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও প্রণোদনা মুশুদ্দি ইউনিয়নের কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা সবজি আবাদে খুবই আগ্রহী। সবজি আবাদ করে মুশুদ্দি ইউনিয়নের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close