পিরোজপুর প্রতিনিধি

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২২

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ভিত্তি আর পিলারেই ১৩ বছর

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উন্নতি ভিত্তি আর পিলারেই ১৩ বছর ধরে আটকে আছে। ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার লক্ষে ২০০৮ সালে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ভিত্তি আর পিলার করেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

অপরদিকে ৩১ শয্যার পুরাতন ভবনটি দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে জীর্ণদশা পড়ে রয়েছে। পুরানো ৩১ শয্যার হাসপাতাল ভবন ধ্বসে পড়ার উপক্রম। অন্যদিকে ৫০ শয্যার নতুন হাসপাতাল ভবনটি ভিত্তি আর পিলারেই আটকে আছে ১৩ বছর।

জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৫ আগস্ট মেসার্স নূরই এন্টারপ্রাইজ নামের বরিশালের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত ৫০ শয্যার নতুন ভবন নির্মাণ কাজ পান। ২০০৮ সালের ২৫ আগস্ট ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ওই কার্যাদেশের ১৮ মাসের মধ্যে সম্প্রসারিত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া কথা। পরে দুইটি পুকুর খনন করে ভিত্তি আর পিলার নির্মাণ পরবর্তী ফেলে রাখা হয়।

এমন অবস্থায় স্থবির হয়ে পড়ে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ। কর্তৃপক্ষের নিকট বারবার এ ব্যাপারে আবেদন করার পর ২০১৪ সালের ২৫ জুন মেসার্স নূর-ই এন্টারপ্রাইজ নামের ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দরপত্রের কার্যাদেশ বাতিল করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনের সাথে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৪ ইউনিটের ২টি নতুন আবাসিক ভবন নির্মান, একটি নতুন দ্বিতল বর্হিবিভাগ ভবন ও পুরনো হাসপাতাল ভবন এবং কোয়ার্টারগুলোর সংষ্কারের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। নতুন হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রতার জটিলতায় উপজেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পুরানো ৩১ শয্যার হাসপাতাল ভবনটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও দুইজন চিকিৎসক নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসক সংকট ছাড়াও ১৩ বছর পূর্বে ঘোষণা করা ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির দায় সারা চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। সামান্য বৃষ্টি হলেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনের ছাদ চুয়ে পানি পড়া, সিলিং ও ভিম থেকে কংক্রিট ভেঙে পড়া নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের আবাসস্থলের অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। যে কোন সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা চিকিৎসক কর্মচারীদের। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় করুণ হাল বিরাজ করছে। পিরোজপুর জেলার ৭৯ দশমিক ৬৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কাউখালী উপজেলাটি পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন ডাক্তারের স্থলে ডাক্তার রয়েছে মাত্র ৫ জন ।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বহুবার আবেদনের পরও ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করনের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। ডাক্তার এবং জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবায় বিঘœ ঘটছে। ঝুকিপূর্ণ ভবনে ডাক্তার এবং রোগী উভয়ই আতংকের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনাসহ প্রানহানি ঘটতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close