আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২২

সান্তাহার রেলওয়ে ইনস্টিটিউট

‘ওয়াহেদ বক্স’ শুধুই স্মৃতি

ব্রিটিশ আমল থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত সান্তাহার রেলওয়ে ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তন ছিল বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার প্রাণকেন্দ্র। মিলনায়তনে দর্শক আসন সংখ্যা ছিল ৪০০। এখন সব কিছুই বিলীন হওয়ার পথে। ভবনটি কেউ দেখলে বিশ্বাস করবে না এর অতীত ইতিহাস। অবহেলায় যেন রুগ্ণ, জীর্ণ এক পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। খেলার মাঠটিও পরিত্যক্ত।

নাট্য অভিনেতারা আক্ষেপ করে বলেন, নাটক করার জন্য আর মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও নাটক তেমন পছন্দ করে না। নাটক নেই বলে সমাজের যুবক শ্রেণি অবক্ষয়ের দিকে পা বাড়াচ্ছে।

সান্তাহার রেলওয়ে ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে এ ভবনের আশপাশ এলাকা গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তন অবহেলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। হারিয়ে গেছে এর জৌলুস, বন্ধ হয়ে গেছে সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। এখন এটি শুধু পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ভবন।

সান্তাহার পৌর এলাকার ইয়ার্ড কলোনিতে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মিলনায়তনকে এলাকার সবাই ‘রেলওয়ে ইনস্টিটিউট’ নামে চেনে। ৯০ দশক পর্যন্ত সান্তাহারের সব সভা-সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই মিলনায়তনকে জমজমাট রাখত। মিলনায়তনের চারদিকে আলোকসজ্জা, বর্ণাঢ্য গেট, সাউন্ড বক্স আর মাইকের শব্দে পুরো সান্তাহার শহর থাকত মুখরিত। প্রতি বছর সারা দেশের একাধিক নাট্যদল নাট্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। দেশবরেণ্য চিত্রপরিচালক আজিজুর রহমান, নাজমুল হুদা মিন্টু ও অভিনেতা কামরুজ্জামান বাহাদুরের গ্রামের বাড়ি সান্তাহারে হওয়ায় তাদের পদচারণায় এক সময় মুখরিত থাকত ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তন।

এছাড়া সান্তাহারের নাটক পাগল মানুষ হিসেবে পরিচিত শহিদুল্লাহ, ওয়াদুদ, আলম খান, পূর্ণিন্দ, বেবী, কিবরিয়াসহ আরো অনেক নাট্যশিল্পীর নাটক দেখে মুগ্ধ হতো এলাকাবাসী। প্রতিষ্ঠানের বাহিরে সুপরিসর একটি খেলার মাঠও রয়েছে। মাঝে মধ্যে রাজনৈতিক জনসভা কিংবা ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল হতো এ মাঠে। সবকিছু মিলিয়ে ব্রিটিশ আমল থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত এ ইনস্টিটিউট ছিল উপজেলার প্রাণকেন্দ্র। এখন সব কিছুই বিলীন হওয়ার পথে। ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তনকে সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন উপজেলাবাসী।

ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তনের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী (আইওডাবলু) আব্দুর রশিদ বলেন, মিলনায়তনটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে যে পরিমাণ লোক রাখা প্রয়োজন তা আমি দিতে পারি না। লোকবল সংকটের কারণে সংস্কার কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই ভবনটি জরাজীর্ণতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার যেহেতু রেলওয়ের উন্নয়ন ব্যাপারে বিভিন্ন স্টেশনে ব্যাপক বরাদ্দ দিয়ে আসছেন। এটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠাব। বরাদ্দ পেলে দ্রুত এ সমস্যাগুলোর সমাধান করা সম্ভব হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close