নওগাঁ প্রতিনিধি

  ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

মধ্যপ্রাচ্যের স্কোয়াশ চাষ নওগাঁয়

দেশে প্রায় সব অঞ্চলেই বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির চাষ হয়ে থাকে। বর্তমানে অনেক স্থানে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে স্কোয়াশ চাষ প্রতি বছর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু উত্তরের জেলা নওগাঁয় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সবজি স্কোয়াশ চাষ হচ্ছে। শীতকালীন এই সবজি পুষ্টিকর, সু-স্বাদু, স্বল্পমেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল, লাভজনক স্কোয়াশ চাষ করেছেন সদর উপজেলার কৃষক আবদুল লতিফ।

বিষমুক্ত স্কোয়াশের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় স্কোয়াশ বিক্রি করে ভালো লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ তার এক বিঘা জমিতে বিদেশি হাইব্রিট জাতের স্কোয়াশ সবজি চাষ করেছেন। জমিতে বীজ রোপনের ২ মাসের মধ্যেই গাছগুলো বেড়ে ওঠেছে। সেই স্কোয়াশের গাছে গাছে অসংখ্য হলুদ রঙ্গের ফুল ফুটে আছে আর গাছের নিচে গোড়ায় গোড়ায় বোটায় ছোট বড় অনেক স্কোয়াশ ফল। কোনটির ওজন দুই থেকে আড়াই কেজির মতো। এই সবজিটি দেখতে অনেকটা শশার মত মনে হয় কিন্তু আকারে অনেক বড় এবং বাইরের ত্বক শশার মত হলেও এই সবজিটির আকৃতি একটা বড় সরু মিষ্টি কুমড়ার মতো। প্রতিদিনই স্কোয়াশ ক্ষেত দেখতে যাচ্ছেন আশে-পাশের গ্রামের অনেক কৃষক।

স্থানীয় ফতেপুর গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, এই প্রথম আমাদের এলাকায় মঙ্গলপুর গ্রামের কৃষক লতিফ বিদেশী জাতের স্কোয়াশ চাষ করেছে। এই সবজির নাম আমি ব্যক্তিগতভাবে আগে কখনো শুনিনি বা দেখিনি। গত বছরের নভেম্বরে এ সবজির চাষ শুরু করে। বর্তমানে দুই থেকে আড়াই কেজি ওজন হয়েছে প্রতিটি স্কোয়াশের। যতদূর জানি এখন পর্যন্ত রোগবালাই হয়নি। মনে হচ্ছে এটি লাভবান একটি সবজি। পরিকল্পনা করছি স্কোয়াশ চাষ করার।

কথা হয় স্কোয়াশ চাষী আব্দুল লতিফের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতকালীন সময়ে আমি আলু, টমেটো, সিম, কপি এসব সবজির আবাদ করতাম। গত বছরের অক্টোবরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় স্কোয়াশ চাষ শুরু করি। নভেম্বরের শুরুতে এক বিঘা জমিতে বীজ বপন করি। বর্তমানে ২ মাস ১০ দিনে প্রায় বিক্রির উপযুক্ত হয়ে গেছে। তবে চলতি মাসের শেষের দিকে ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করা শুরু করবো। এখন প্রতিটি স্কোয়াশ দুই থেকে আড়াই কেজি ওজন হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি নওগাঁর উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ জানান, মধ্যপ্রাচ্যের এই স্কোয়াশ চাষ অল্প খরচের ফসল। দ্রুত বর্ধনশীল একটি সবজি ও অল্প পরিশ্রমেই অধিক আয় করা সম্ভব। এ ফসলে কোনো রোগের উপদ্রব তেমন নেই। দেশের প্রচলিত কোনো সবজির এমন ভালো উৎপাদন ক্ষমতা নেই। স্কোয়াশ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে নওগাঁর কৃষি অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। যদি কোন কৃষক স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হয়, তবে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close