নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৪ নভেম্বর, ২০২১

ভর্তুকির সার বিক্রিতে ডিলারদের সিন্ডিকেট

নাচোলে এক বস্তা ডিএপি সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১৫০-২০০ টাকা বেশি নেওয়ার অভিযোগ কৃষকের

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সিন্ডিকেটের কারণে ভর্তুকির সার বিক্রিতে নৈরাজ্য চলছে। উপজেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পরও থামছে না এই নৈরাজ্য। কতিপয় সিন্ডিকেটের কারণে সরকারের মহৎ উদ্যোগ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকের অভিযোগে ডিএপি এক বস্তা ৫০ কেজির সারের সরকারি মূল্য ৮০০ টাকা হলেও তাদের কিনছেন ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায়।

অনুমোদিত ডিলারকে বরাদ্দ সার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তোলন করতে হয়। সার উত্তোলনের পর উপজেলা মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা সদস্য সচিব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পৃথক অথবা যৌথভাবে ডিলারের দোকান পরিদর্শন করে সার উত্তোলন ও সংরক্ষণের কাগজপত্র নিশ্চিত হবেন। গুদাম থেকে সার উত্তোলনের পর পরিবহনের বরাদ্দপত্র, চালান ও বাফারের ছাড়পত্র, কোথায় সার যাবে, সেই ঠিকানা চালানপত্রে থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু নাচোল উপজেলায় সার বিক্রিতে এসব নিয়মের কোনো বালাই নেই। কোনো ডিলার সার উত্তোলন করতে না পারলে তার বরাদ্দ মনিটরিং কমিটির কাছে সমর্পণ করতে হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা সার মনিটরিং কমিটি বিষয়টি জানার পরও অজ্ঞাত কারণে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার মাক্তাপুর গ্রামের কৃষক এরফান আলীর ছেলে মজিদুল সার কেনার জন্য দবির ট্রেডার্স নামের এক ডিলারের দোকানে গেলে সার নেই বলে জানায় দবির। পরে ওই কৃষককে ঘরে নিয়ে শপথ করিয়ে দবির বলেন, ‘সারের দাম নিব ৯৫০ টাকা, তবে এ কথা কাউকে বলতে পারবি না।’ কৃষক মজিদুল সারের প্রয়োজন থাকায় ৯৫০ টাকা করে দুই বস্তা ডিএপি সার ক্রয় করে। মজিদুল সারের দাম ৯৫০ টাকা দিলেও ডিলার দবির কৃষক মজিদুলকে ৮০০ টাকা দরের স্লিপ ধরিয়ে দেয়।

অপর দিকে সার ডিলার তৌহিদ ট্রেডার্সের দোকান থেকে একই দিনে সমাজকল্যাণ এলাকার কৃষক ইমরান আলী এক বস্তা ডিএপি সার ক্রয় করে এক হাজার টাকা দিয়ে।

অভিযোগ রয়েছে বিসিআইসি সার ডিলার সিরাজুল ইসলাম, পলাশ, ধানসুড়া বাজারে বিশ্বাস ট্রেডার্স, কালইর বাজারে নিলয় ট্রেডার্সসহ আরো বেশ কয়েকজন ডিলার সিন্ডিকেট করে চলতি মাসের সারের বরাদ্দ যথাসময়ে উত্তোলন না করে বাজারে সারের সংকট দেখিয়ে সাধারণ কৃষকদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করছে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সারের দাম বেশি নেওয়ায় নৈমুউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে পলাশকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ। উপজেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পরও সার বিক্রিতে নৈরাজ্য ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মদ বলেন, আমরা প্রত্যেক সার ডিলারদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। সারে বেশি দাম নেওয়ার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভর্তুকির সার বিক্রিতে কোনো নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না। কৃষক ভাইরা যদি সারে বেশি দাম নেওয়ার কথা প্রমাণ সাপেক্ষে বলেন, তাহলে ওই সার ডিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close