শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান
পাহাড়ে আমন কাটার ধুম
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আমন মৌসুমে ধান কাটার ধুম পড়েছে। পাহাড়ি এলাকাটির নদীর তীর ও ছোট ছোট বিলে নারী-পুরুষ একসঙ্গে ধান কাটছেন মহানন্দে। এ আনন্দে ভাগ বসালেন স্থানীয় সদর ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন ও সঙ্গে মহিলা সদস্য রাশেদা বেগম। এ দুই জনপ্রতিনিধি কৃষকের ধান কেটে দিয়ে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
আমান মৌসুমের শুরুর সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি বাঙালির পাড়ায় পাড়ায় শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসবও। সোনাইছড়ির খেতে ধান কাটার সময় মিমি চাকমা বলেন, নারী হয়ে জন্মালেও তারা ঘরে বসে থাকে না।
ধান কাটা, জুম চাষ, নবান্ন উৎসবের পিঠাপুলি বানানোসহ সব কাজ তারা করে থাকে সারা বছর। এভাবে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের শত শত নারী-পুরুষ ধান কাটাসহ সব কাজ করে আসছেন পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। সঙ্গে নবান্ন উৎসব ও চলছে সমান তালে। বাঙালিরা তো আছেই।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন জানান, সীমান্ত শহর নাইক্ষ্যংছড়িতে আমন কাটার ধুম পড়েছে। পাহাড়ি নারীরাও নেমেছে ধান খেতে, তাই তিনি ও এলাকার কৃষকদের উৎসাহিত করতে নিজে ধান কেটে একটু হলেও সহায়তা দিলেন। পাহাড়ি বাঙালিদের ঘরে ঘরে যেন নবান্নের মহোৎসব।
তিনি আরো বলেন, হেমন্ত হলো ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু, যা কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস নিয়ে গঠিত। কৃত্তিকা ও আর্দ্রা এ দুটি তারার নাম অনুসারে নাম রাখা হয়েছে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের। এ ঋতুতেই হয় নবান্ন উৎসব। ‘অগ্র’ ও ‘হায়ণ’ এ দুই অংশের অর্থ যথাক্রমে ‘ধান’ ও ‘কাটার’ মৌসুম। পাহাড়িরা এটি ঘটা করে পালন করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ ইনামুল হক বলেন, ধানের ম-ম গন্ধে ভরে উঠছে ফসলের খেত। মাঠের পর মাঠজুড়ে সোনালি কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি খেত যেন দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে। শুরু হয়েছে ধান কাটা। এরপর মাড়াই আর ঘরে তোলার মহোৎসব। এবার নাইক্ষ্যংছড়িতে ৩ হাজার ৪৪১ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে। ধান কাটা শুরু হয়েছে, কোথাও আবার ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষক। অনেক কৃষক ধান মাড়াই করে চাল, গুরি (চালের গুঁড়া) নিয়ে শুরু করেছে নবান্ন উৎসব। আর কৃষানিরা বানাচ্ছে পিঠাপুলি।
এ কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, গতবার সরকারি খাদ্য গুদামে
প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা হারে বিক্রি করেছিলেন কৃষক। এবার এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আশা করি কৃষকরা ভালো দামে তাদের ধান বিক্রি করতে পারবেন।
"