আনোয়ার হোসেন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)

  ২২ নভেম্বর, ২০২১

আগাম আলু তোলা শুরু লাভের আশা কৃষকের

কিশোরগঞ্জে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ

আশ্বিনা বৈরী আবহাওয়ার ঝক্কি-ঝামেলা কাটিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নতুন আলুর সুখবর দিলেন কৃষক। দেশের বাজারে প্রথম আগাম আলু উপহার দিতে শুরু হয়েছে আলু উত্তোলনের উৎসব। বাজারে নতুন আলুর চাহিদা থাকায় অধিক লাভের আশা করছেন চাষী। চলতি বছর এ অঞ্চলে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে রবিবার দেখা যায়, উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উ. দুরাকুটি জয়নোনেরকোট গ্রামের কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম ৪ বিঘা ও একই এলাকার হাড়িবেচা পাড়া গ্রামের মমেনুর ২ বিঘা জমির আগাম আলু উত্তোলন করেছেন। ফলন একটু কম হলেও চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন এমনটাই আশা করছেন তারা।

কৃষক আনোয়ারুল বলেন, বরাবরের মত চলতি বছর আমি, ৩৫ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। এর মধ্য ৪ বিঘায় লাগানো ছিল আগাম জাতের আলু। ২০ সেপ্টেম্বর, ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতে আলু লাগানোর পর ৬১ দিনের মাথায় আলু তুললাম। জমিতে ৪০ জন শ্রমিক কাজ করেছে। যা ৪ বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ বস্তা আলু হবে। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও ৮০ থেকে ১০০ টাকা বাজারের আশায় তুলেছি। ওই দামে বিক্রি হলে লক্ষাধিক টাকা খরচ বাদে দিগুণ টাকা লাভ হবে।

অপর কৃষক মমেনুর জানান, ২০ সেপ্টেম্বরে ২ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি ভালো দামের আশায়। তবে জমি উচু হওয়ায় আশ্বিনা বৃষ্টিপাতে তেমন কোন ক্ষেতি হয়নি। এখন সেই জমির আলু তুলছেন তিনি। যা ১০ থেকে ১২ বস্তা আলু হবে। খরচ বাদে দিগুন টাকা আয় হবে। দেশের বাজারে চমক প্রদসহ চড়া দামের আশায় আলু ট্রাকযোগে ঢাকা কাওরান বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্ততি নিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, আগাম আলুর মৌশুমে বৈরী আবহাওয়ায় কারণে আগাম আলু চাষিরা বিপাকে না পড়লে ইতিমধ্য ৩০ শতাংশ জমির আলু বাজারে চলে আসত। এখন টুকটাক আলু তোলা শুরু হয়েছে। আর কদিন গেলে উপজেলার ৯টি ইউপির বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে আলু উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হবে। তবে বাজার দর ঠিক থাকলে আলু চাষিরা লাভবান হবে। আর ব্যবসায়ীরা হুমড়ি পড়ে ট্রাকে ট্রাকে এ আলু ঢাকা চট্রগ্রাম, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সরবরাহ করেন। আলু চাষে এ অঞ্চলের কৃষকের শুধু দিন বদলই নয় ফিরেছে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন।

তারা আরো জানান, আলু উত্তোলনের পর ওই জমিতে পুনরায় নমলা আলুসহ সাথী ফসল হিসেবে ভুট্রা, মিষ্টি, কুমড়া, কাঁচামরিচ ও শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়। পরবর্তীতে ওই ফসলে আর সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান জানান, নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। বর্তমান আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের আগাম আলু বাংলাদেশের জন্য রোল মডেল। কৃষকরা ভাল দাম পেলে আগামীতে আরো কৃষক আগাম আলু চাষে উৎসাহী হবে। চলতি বছর এ আলু উৎপাদানের অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙবে বলে আশা করছি। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close