রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২২ নভেম্বর, ২০২১

হুকুম দখলের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে নোটিস

রূপগঞ্জে আর্থিক ক্ষতির মুখে কৃষক

রূপগঞ্জের তারাবোতে দাবি করা টাকা না দেওয়ায় হুকুম দখলের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে কৃষকদের নোটিস জারি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জমির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।

ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল সাপ্লাই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা ওয়াসা রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার গন্ধর্বপুর মৌজার ৪০ বিঘা জমি ভূমি হুকুম দখল করে। কৃষকদের নামে জারিকৃত ৭(১)নং উপধারায় নোটিস যথার্থ হয়নি বলে দাবি অনেকের। একজনের নোটিস অন্যজনকে প্রদান করাসহ নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

হুকুম দখলকৃত জমির দাম শ্রেণিভেদে কমবেশি করা হয়েছে। জমির সরকারি রেজিস্ট্রি ফির তালিকার তিন গুণ হিসেবে ডোবা জমির দাম ২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, কৃষি নাল জমি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আমন, খামা, বোরো, শাইল ৯৪ হাজার ২০০ টাকা, ভিটি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, বাগান, চালা ৭৩ হাজার ২০০ টাকা, বাড়ি ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, পুকুর ৬৬ হাজার ৩০০ টাকা, পতিত ৩০ হাজার টাকা মূল্য ধরা হয়েছে।

গন্ধর্বপুর এলাকার আবুল বাশার বাবুল, সোলায়মান মিয়া, আওলিয়া বেগম, মমিনা বেগম, শুক্কুর আলীসহ ২৭ জনের মালিকানাধীন গন্ধর্বপুর মৌজার আরএস ২৫১নং খতিয়ানের আরএস ৮৭৩ ও ৮৭৪ নং দাগের ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কৃষি নাল জমি হুকুম দখল করা হয়। পরে জমির মালিকদের কৃষি নাল জমির পরিবর্তে ডোবা দেখিয়ে ৭(১) উপধারায় তাদের নোটিস প্রদান করা হয়। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা থেকে তারা বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন।

গত ২ জুলাই ও ৩১ আগস্ট কৃষকরা নারায়ণগঞ্জ ভূমি হুকুম দখল অফিসে তাদের জমির সঠিক জরিপ করার জন্য পৃথক পৃথক আবেদন করে। দাবি করা টাকা না দেওয়ায় গত ৫ মাসেও কৃষকদের জমির সঠিক জরিপ করা হয়নি। উল্টো ওই কর্মকর্তারা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে কৃষকদের ভয়ভীতি, হুমিক-ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গন্ধর্বপুর গ্রামের কৃষক আবুল বাশার বাবুল বলেন, আমাদের জমিগুলো সিএস, এসএ ও আরএস পর্চায় কৃষি নাল জমি। জন্মের পর থেকে দেখে আসছি ওই জমিতে ধান চাষ করা হয়। অথচ নারায়ণগঞ্জ জেলা ভূমি দখল অফিসে নিয়োজিত সার্ভেয়ারদের জরিপ কাজে দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় তারা কৃষি জমি এখন ডোবায় পরিণত করেছেন। ভূমি হুকুম দখল অফিসের জারি করা প্রথম নোটিসে নাল হিসেবে আখ্যায়িত করলেও দ্বিতীয় নোটিসে ৭(১) ধারাতে ডোবা লেখা হয়েছে। তাতে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ, উত্তেজনা বিরাজ করছে।

কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, ৭(১)নং উপধারায় আমার জমির শ্রেণিও পরিবর্তন করে ডোবা করেছে। অভিযুক্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ভূমি হুকুম দখল অফিসের সার্ভেয়ার ইকবাল হোসেনকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার মোহসিন পাটোয়ারী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমির মালিকদের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

জেলা ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা শান্তা রহমান বলেন, কৃষকরা আবেদন করলে তাদের বিষয়টি আমি দেখবো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close