মাহমুদুল হাসান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

  ২১ নভেম্বর, ২০২১

মাদারবুনিয়া-রসুলবাড়িয়া খালে কাঠের সেতু নির্মাণ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মাদারবুনিয়া ও রসুলবাড়িয়া গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া মাদারবুনিয়া খালে ২৮০ ফুট দৈর্ঘ্যরে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. জহির আহম্মেদের উদ্যোগ নির্মাণ করা সেতুটি দিয়ে দুই গ্রামের প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ চলাচল করবেন। তাদের মধ্যে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২০০ জন।

জানা গেছে, এলাকাবাসীর উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে মাদারবুনিয়া খালে পারাপারের জন্য নৌকা দেওয়া হয়। ওই নৌকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছিল ওইসব শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। আর এই খেয়া নৌকা পাড় হয়ে রসুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমলিবাড়িয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, আমলিবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব নেতা এম এইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হালিমা খাতুন মহিলা কলেজ, রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজ এবং উপজেলা পরিষদে যেত লোকজন। তাই মাদারবুনিয়া ও রসুলবাড়িয়া গ্রামের অসংখ্য লোকজন প্রতিদিন মাদারবুনিয়া খালের রশিতে বাঁধা নৌকায় পারাপার হতো। স্থানীয়দের এই দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. জহির আহম্মেদ এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৫০ টাকা ব্যয়ে ১৬ শ্রমিক ২০ দিন ধরে মাদারবুনিয়া খালে প্রায় ২৮০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের উদ্যোগেই এ সেতু নির্মাণ হয়। গতকাল শেষ হয়েছে নির্মাণকাজ। এরই মধ্যে সেতু দিয়ে লোকজন পারাপারও হতে শুরু হয়েছে।

নির্মাণকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা মো. টিপু সলতান নামের এক যুবক বলেন, রসুলবাড়িয়া ও মাদারবুনিয়ার যে খালটি রয়েছে এটিতে দীর্ঘ ৪০ থেকে ৫০ বছর একটি খেয়া নৌকা ছিল। এখানে অন্য কোনো যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল না। অনেক সময় খেয়া নৌকাটিও ডুবে থাকত। মাঝে মধ্যে নৌকা মেরামতের জন্য তোলা হতো। তখন কলাগাছের ভেলায় পারাপার হতো লোকজন। অনেক জনপ্রতিনিধিরা এ পর্যন্ত আশ্বাস দিলেও কোনো সুরাহ হয়নি। তবে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. জহির আহম্মেদের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি আশ্বাস না দিলে পনেরো দিনের মধ্যে নিজ উদ্যোগে একটি কাঠের সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করেন।

রসুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিন বলেন, খালের ওপারে মাদারবুনিয়া এলাকা থেকে রসুল বাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্তত ১৫০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যায়। রশি টেনে খেয়া নৌকায় পার হতে গিয়ে অধিকাংশ সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকি কয়েক বছর আগে দুই শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. জহির আহম্মেদ বলেন, মাদারবুনিয়া খালে দীর্ঘদিন ধরে সেখানকার লোকজন রশিতে বাঁধা খেয়া নৌকা দিয়ে পারাপার হয়ে আসছে। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৫০ টাকা দিয়ে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছি। সেখানে যাতে একটি স্থায়ী সেতুর নির্মাণ হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করছি। যাতে দ্রুত গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিজানুল কবির বলেন, আমরা এরই মধ্যে জায়গা পরিদর্শন করে আয়রণ ব্রিজ প্রকল্পে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close