অলিউজ্জামান রুবেল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

  ২১ নভেম্বর, ২০২১

গবেষক-জনবল সংকটে ধুঁকছে লাক্ষ্মা চাষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭০ শতাংশ উৎপাদন হয়

দেশের একটি উল্লেখযোগ্য রপ্তানিপণ্য লাক্ষ্মা। তবে বর্তমানে লাক্ষ্মা চাষের সেই সোনালি দিন আর নেই। একসময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বরই, বাবলা, কড়ইগাছের বাগানে লাক্ষ্মা চাষ করা হলেও নানা সংকটে বরইগাছে এখন লাক্ষ্মা চাষ করছেন না চাষিরা। তবে গবেষক সংকটের মধ্যে পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সম্ভাবনাময় লাক্ষ্মার চাষাবাদ। এ ছাড়া জনবল সংকটে ধুঁকছে দেশের একমাত্র লাক্ষ্মা গবেষণা কেন্দ্রটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের একমাত্র লাক্ষ্মা গবেষণা কেন্দ্রটি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। যদিও সেটি গবেষক-বিজ্ঞানীসহ জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে। একাধিক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদ থাকলেও মাত্র একজন বিজ্ঞানীর পদায়ন দিয়ে চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কল্যাণপুরে ২৪ একর জমির ওপর লাক্ষ্মা গবেষণা কেন্দ্র।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ লাক্ষ্মা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে লাক্ষ্মার চাহিদা রয়েছে দশ হাজার টন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদন হচ্ছে দেড় থেকে ২০০ টন লাক্ষ্মা। এর ৭০ শতাংশ উৎপাদন হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। অবশিষ্ট লাক্ষ্মা আমদানি করা হয় পাশের দেশ ভারত থেকে।

লাক্ষ্মা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চল নাচোল উপজেলায় লাক্ষ্মা চাষ বেশি হচ্ছে। তবে নতুন চাষি পাওয়া যাচ্ছে না। যারা চাষাবাদ করছেন তারা মূলত বাপ-দাদার অস্তিত্ব ধরে রাখতেই লাক্ষ্মা চাষ করছেন।

নাচোলের লাক্ষ্মাচাষি ইসমাঈল আলী জানান, তারা বংশগতভাবেই লাক্ষ্মা চাষ করে আসছেন। প্রতি বছর ২৫-৩০ মণ লাক্ষ্মা উৎপাদন করতেন। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে না থাকা, লাক্ষ্মা গবেষকদের অবহেলা, ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে প্রায়ই বন্ধ করে দেন লাক্ষ্মা চাষ। তার পরও দুই বছর থেকে ৫-৬ মণ লাক্ষ্মা চাষ করে আসছেন।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় লাক্ষ্মা গবেষণ কেন্দ্র থেকে যদি পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা পাওয়া যায়, তবে আবার আগের মতো লাক্ষ্মার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে প্রতি কেজি লাক্ষ্মা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব লাক্ষ্মা পার্শ্ববর্তী নওগাঁর ব্যবসায়ীরা বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যান।

শিবগঞ্জ উপজেলার একসময় পুরোনো লাক্ষ্মাচাষি তরিকুল ইসলাম জানান, প্রতি মৌসুমে তিনি ৫০-৬০ মণ লাক্ষ্মা চাষ করতেন। দিন দিন আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব ও আম বাগানে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগে লাক্ষ্মা চাষ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবং লাক্ষ্মা গবেষকদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ লাক্ষ্মা গবেষণা কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার মো. মোখলেসুর রহমান জানান, লাক্ষ্মা একটি লাভজনক ফসল। আবহাওয়াগত কারণে চাঁপাইয়ে লাক্ষ্মা চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায়

আম চাষ বেড়ে যাওয়ায় উঁচু অঞ্চল বরেন্দ্র এলাকায় লাক্ষ্মা চাষের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও প্রতিনিয়ত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। এ ছাড়া লাক্ষ্মার চাষ বাড়াতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close