কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও
কেরানীগঞ্জ নীলিমা বহুমুখী সমবায় সমিতি
ঢাকার কেরানীগঞ্জে হাজারখানেক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে নীলিমা বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকায় প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়টি বর্তমানে তালাবদ্ধ। ফলে গ্রাহকরা তাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন এবং প্রতিষ্ঠানটির সামনে ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সামনে বিক্ষোভ করছেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর আগে স্থানীয় নুরু মিয়ার ছেলে মো. মোমিন নীলিমা বহুমুখী সমবায় সমিতিটি চালু করে। এত দিন সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। হঠাৎ করে হাজারখানেক গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করে তারা আত্মগোপন করেছে। আশপাশের খেটে খাওয়া মানুষ ও মধ্যবিত্তদের উচ্চহারে
মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ জমা করতে উদ্বুদ্ধ করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তারা স্থানীয় হওয়ায় এলাকাবাসী তাদের কথায় বিশ্বাস করে প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ জমা রাখেন। শুরু থেকে গ্রাহকদের আমানত ও মুনাফার টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে।
গত কয়েক মাসে যেসব গ্রাহকের এফডিআর/ডিপিএসের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে, তাদের গতকাল সকালে টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সকালে গ্রাহকরা অফিসে গিয়ে দেখেন অফিস তালাবদ্ধ অবস্থায়। মুঠোফোনে কল দিলে সব নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন জানাজানি হলে, সবাই বুঝে যান, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের আমানত নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সামনে ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ভুক্তভোগীরা।
শিলা ইসলাম নামে এক গ্রাহক জানান, তিন লাখ টাকার একটা এফডিআর ছিল, আমানত ও
মুনাফার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। গতকাল সকালে গিয়ে জানতে পারি তারা পালিয়েছে। তার মতো তাদের এমন অনেক গ্রাহক আছে। এ ছাড়া এলাকার স্থানীয় অনেক গরিব পরিবারের সঞ্চয়ের টাকাও আছে তাদের কাছে। দ্রুত এই প্রতারক চক্রের সদস্যদের খুঁজে বের করে আমানত ফিরিয়ে দেওয়া ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানা তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, প্রচলিতে আইনে সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে জনগণেরও সচেতন হতে হবে।
"