রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ১৮ অক্টোবর, ২০২১

এক শিক্ষক দিয়েই পাঠদান

লক্ষ্মীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার লক্ষ্মীকোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান করাচ্ছেন একজন শিক্ষক। যেদিন শিক্ষা অফিসে শিক্ষকদের মিটিং থাকে সেদিন বাধ্য হয়েই স্কুলের নৈশপ্রহরী আবার কখনো প্রতিবেশি লোকজন ডেকে পাঠদান করানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি চলার ফলে ভেঙে পরেছে বিদ্যালয়ের পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম।

জানা গেছে, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিস্তারের লক্ষ্যে এলাকার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহল গত ১৯১০ সালে উপজেলার লক্ষীকোলা গ্রামে ‘লক্ষীকোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়’ স্থাপন করেন। এর পর থেকে ওই অঞ্চলে ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো বিস্তার করতে থাকে।

ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, গত ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি লক্ষীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই সময় বিদ্যালয়ে মাত্র তিন জন শিক্ষক ছিল। পরে তিনজন শিক্ষকের মধ্যে পবিত্র মন্ডল নামে একজন সহকারী শিক্ষক গত ২০২০ সালের অক্টোবরে চাকরি ছেড়ে একটি ব্যাংকে যোগদান করেন। এর পর থেকে দুজন শিক্ষক দিয়ে চলত স্কুলের কার্যক্রম। এরই মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অপর সহকারী শিক্ষক ফারজানা আক্তার দেড় বছরের জন্য ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) ট্রেনিংয়ে চলে যান। এর পর থেকে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট ৬১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে ওয়ার্ক সিট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া আবার সেগুলো নিয়ে আসা, খাতা মূল্যায়ন করা এবং অফিসের নানা রকম কাজকর্ম করা এগুলো নিয়ে যেন হাঁপিয়ে ওঠেছি। একটি প্রতিষ্ঠানে যে পরিমাণে কাজকর্ম থাকে তাতে কোন ভাবেই একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। অফিসের কাজ করতে গেলে পাঠদান ব্যহত হয়। আবার পাঠদান করতে গেলে অফিসের কাজকর্মে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক চেয়ে শিক্ষা অফিস বরাবর আবেদন করা হয়েছে জানি না কবে নাগাদ শিক্ষক পাব।

স্থানীয়রা জানায়, আগে বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান খুবই ভালো ছিল। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পরেছে। এমনিতেই করোনা কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা ভেফু পড়েছে এর মধ্যে আবার শিক্ষক সংকট। এভাবে আর কিছু দিন চলতে থাকলে বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী থাকবে না। দ্রুত এ সংকট কেটে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সচল করতে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি দাবি জানান তারা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার সামছুজ্জামান বলেন, লক্ষীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কথা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সংকটের অবসান হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close