গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

  ১১ অক্টোবর, ২০২১

সরকারি জলাশয়ে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার

গুরুদাসপুরের চলনালী বিলের পাঁচ কিলোমিটারের একটি সরকারি জলাশয় দখল করে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় মসজিদ কমিটি। মাছ শিকারের জন্য বিলের পানি নিষ্কাশনের উৎসমুখে এবং জলাশয়ের বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দেওয়া হয়েছে। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় রবিশস্য আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন ওই এলাকার কৃৃষকেরা।

গুরুদাসপুরের নারীবাড়ি উত্তরপড়ার কান্টাগাড়ি বিলের চলনালী কান্দিপাড়া হয়ে চরকাদহ বিলে গিয়ে মিশেছে ওই জলাশয়। এই জলাশয়ের পানিতেই চলনালী-কান্দিপাড়া, কান্টাগাড়ি, পাটপাড়া, সোনাবাজু, চাকলের বিলের রবিশস্য আবাদের চাষাবাদ করা হয়। আবার বর্ষার পানি ওই জলাশয় দিয়েই নিষ্কাশন হয়ে থাকে। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারি ওই জলাশয়ে বাঁশের বাঁধ দিয়ে চলনালী বিল উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। ডাকের ওই টাকা মসজিদের উন্নয়নে ব্যবহার করার কথা বলছে মসজিদ কমিটি। এ বছর স্থানীয় দুলাল নামের এক ব্যক্তি দুই লাখ টাকায় চলনালী বিল ও সরকারি জলাশয় ডেকে নিয়ে পূর্বপাড়ায় বিলের উৎস্যমুখে বাঁশের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছেন।

স্থানীয় কৃষক আবুল মিয়া, মাহবুর, মোজাফ্ফরসহ ১০ জন অভিযোগ করে বলেন, প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলনালী বিল ডেকে নিয়ে মাছ শিকার করেন চরকাদহ মসজিদ কমিটি। বিলের উৎসমুখে বাঁশের বাঁধ দেওয়ায় পানি নামতে দেরি হয়। ফলে রবিশস্য চাষাবাদের জন্য চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। মসজিদ কমিটিতে উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার ভাই থাকায় ওই ডাকের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।

চরকাদহ মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই বিল ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করে মসজিদ কমিটি। তাছাড়া সরকারি ওই জলাশয়ে বা বিলে মাছ শিকার করতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। এ কারণে বর্তমান কমিটি সামাজিকভাবে বিলটি উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করেছে। চলনালী গ্রামের ইউপি সদস্য এম এ মুনসুর রহমান মিন্টু জানান, বিল এবং জলাশয়টি চলনালী মৌজাতে হলেও চরকাদহ মসজিদ কমিটি অবৈধভাবে ডাকের মাধ্যমে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে। এ নিয়ে ধারাবারিষা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে চলনালী গ্রামের কৃষকরা অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল মতিন বলেন, বিষয়টি মসজিদভিত্তিক হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। তবুও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল জানান, কোনো বিল বা সরকারি জলাশয় ডাকের অধিকার কারো নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close