কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ধান ও কলাগাছ রোপণ
কালকিনিতে স্কুলের সভাপতির পদ থেকে বাদ দেওয়ায় ছোট ভাইকে দিয়ে দখল
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রায়পুর কাচারিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ প্রভাবশালীদের দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতির ভাইসহ কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের একমাত্র মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে বেদখল থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে জায়গা উদ্ধার করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের রায়পুর কাচারিকান্দি গ্রামে ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য একই গ্রামের ইসমাইল সরদার ও তার স্ত্রী ময়মুন নেছা ২২ শতাংশ ও মনির সরদার ১১ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেন। পরে বিদ্যালয়ের জমিদাতা হিসেবে মনির সরদার দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি মনির সরদারকে শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে সভাপতির পদ থেকে বাদ দেওয়া হলে তার ছোট ভাই আক্তার সরদার স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে মাটি কেটে ধান ও কলাগাছ রোপণ করেন। এতে করে বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলাও করতে পারছে না। দখলের ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেন জমি উদ্ধারের দাবিতে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
মাটি কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আক্তার সরদার বলেন, ‘আমার জমিতে আমি মাটি কাটতেছি এবং ধান ও কলাগাছ লাগিয়েছি। স্কুল যদি জমি পায় নেবে। আমরা পাঁচ ভাইবোন। আমার ভাই দলিল দিলে তারটুকু দিতে পারে। আমাদের অন্য ভাইবোনদের জমি দলিল দিতে পারে না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘সাবেক সভাপতির ভাইসহ বেশ কয়েকজন মিলে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে মাটি কেটে ধান ও কলাগাছ রোপণ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি ইউএনও স্যারের কাছে দরখাস্ত দিতে বলেন। পরে সেখানে দরখাস্ত দিয়েছি। তখন ইউএনও স্যার তহশিলদার দিয়ে মাটিকাটার কাজ বন্ধ করে দেন। দলিলপত্রসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে স্যারের কাছে যেতে বলেছেন।’
কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিক ওই ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখে আপাতত মাটিকাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন দিন-তারিখ ঠিক করে জায়গাটা পরিমাপ করলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।’
এ ব্যাপারে কালকিনি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রায়পুর কাচারিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানিয়েছেন। তহশিলদারকে পাঠিয়ে মাটিকাটার কাজ বন্ধ করেছি। বিদ্যালয়ের দলিল আনতে বলেছি। যারা দাবি করছে তাদেরও দলিল আনতে বলেছি। কার কী সমস্যা তা দেখে সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত বেড়া ছাড়া যে জায়গা আছে, ওখান দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে বলা হয়েছে।’
"