আল-আমিন, বাবুগঞ্জ (বরিশাল)

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে পাল্টে যাচ্ছে বাবুগঞ্জের মানচিত্র

নদীর ৫ কিলোমিটারজুড়ে ধস। শতাধিক পরিবার হুমকিতে

আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র পাল্টে যাচ্ছে। উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের সিংহেরকাঠি, লোহালিয়া গ্রাম ও চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী, আরজি কালিকাপুর ও ভবানীপুর গ্রামের প্রায় ৫ কিলোমিটারজুড়ে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে রহমতপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ছোট মীরগঞ্জ বাজার নদীতে বিলীন হওয়ায় পাশের এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জোয়ারের পানি ও নদীর স্রোতে বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার থেকে প্রবল ভাঙন দেখা দেওয়ায় ছোট মীরগঞ্জ বাজারটি আবারও ঝুঁকিতে পড়েছে।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিংহেরকাঠি গ্রামের নদী পারের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। গত দুই দিনের ভাঙনে ছোট মীরগঞ্জ বাজারের একটি মসজিদ ও কয়েকটি দোকান বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ২৬টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া পানের বরজ, ফসলি জমি ও বসতভিটা হারা মানুষ দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছে।

ছোট মীরগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আলা বক্স বলেন, তার প্রতিষ্ঠান চার বার ভেঙেছে। এবার ভাঙনের কবলে পরলে পথে বসতে হবে। আমরা গ্রামবাসী অস্তিত্ব সংকটে পড়তে যাচ্ছি। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত সূর্য আলম বলেন, আমার ও বড় ভাই শাহ আলমের ঘর ভাঙন কবলে পড়েছি। এছাড়া গত দুই দিনে এই এলাকার কয়েকটি পরিবার ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ ২ কেজি চাল দিয়ে সাহায্য করেনি। আমাদের খোঁজ নেয়নি কেউ।

ভাঙনকবলিত সিংহেরকাঠি এলাকার ইউপি সদস্য জামাল হোসেন পুতুল বলেন, প্রতি বছরই নদীভাঙনে এলাকার ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। গত বছর ২০২০ সালে ছোট মীরগঞ্জ সম্পূর্ণটা ভেঙে গেলে বাজারটি সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু এক বছর পার না হতেই আবার ভাঙনের কবলে পরেছে। এরই মধ্যে বাজারটির ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সমিল, মসজিদ, বসতঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। চাঁদপাশা ইউনিয়নের ময়দানের হাটবাজারের রাস্তার মাথা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ২ কিলোমিটারজুড়ে ভাঙনের কবলে পড়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ময়দানের হাট ও আরজি কালিকাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। নদীভাঙন এলাকার শতাধিক পরিবার গৃহ ও ভূমিহীন হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

চাঁদপাশা ইউপি চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান সবুজ বলেন, এ ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের শতাধিক পরিবার এরই মধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে চাঁদপাশা ও রহমতপুর ইউনিয়নের মানচিত্র হুমকির মুখে পড়বে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, মীরগঞ্জ থেকে দক্ষিণ দিকে ৩ কিলোমিটার আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙন রোধে বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close