টাঙ্গাইল ও মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৪ আগস্ট, ২০২১

যমুনার পেটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মুন্সীগঞ্জে পদ্মায় ভাঙন আতঙ্কে তিন উপজেলা

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের আলীপুর এলাকায় যমুনা নদীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদরাসা ও হাট বিলীন হয়ে যায়। হুমকির মুখে পড়েছে শত শত ঘরবাড়ি ও বসতভিটা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হজরত আলী তালুকদার।

সরেজমিনে জানা যায়, সোমবার বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৩নং বেলটিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ঘর, আলীপুর মাদরাসার তিনটা ঘর, আলীপুর জামে মজজিদ ও হাটের জায়গা বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের আগে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে শুধু কয়েকটা বেঞ্চ বের করা সম্ভব হয়েছে। অন্য সব জিনিস যমুনার পেটে চলে গেছে। এছাড়াও আশপাশের শত শত বাড়িঘর ও বসতভিটা হুমকির মুখে রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল খালেক বলেন, চোখের সামনে মুহূর্তের মধ্যে সব বিলীন হয়ে গেছে। মাদরাসা ও মসজিদের সব আসবাবপত্র সরানোর মতো সময় পাইনি। তিনি ভাঙনরোধে এই এলাকায় একটি স্থায়ী বাঁধের দাবি জানান। স্থানীয় রমজান আলী বলেন, এ পর্যন্ত তিনবার ঘরবাড়ি সরাইছি। তারপরও হুমকির মুখে রয়েছি। কখন বুঝি আবার বর্তমান বাড়িটি যমুনা গিলে খায়।

চেয়ারম্যান হজরত আলী তালুকদার বলেন, এক রাতে যমুনা নদী কেড়ে নিল আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কয়েকজনের বসতবাড়ি।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক পাওয়া গেলে দ্রুত সময়েই ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে। জিওব্যাগ ফেলে ওই এলাকার ভাঙন রোধ করা হবে।

এাদকে মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জে পদ্মার প্রবল স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। নদী তীরের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ভাঙনে এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক একর কৃষিজমি, বসতভিটাসহ অন্যান্য স্থাপনা। গত কয়েক দিনের ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল বানাড়ি এলাকা। ভাঙনে হাসাইল বানাড়ি ইউনিয়নের মানচিত্রই যেন পাল্টে যাচ্ছে। ভয়াবহ এ নদীভাঙনে হাজারো মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

গত দুই দিনে পদ্মার ভাঙনে মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে ১০টি বসতঘর, কৃষিজমিসহ অন্যান্য স্থাপনা। এখনো হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, মাদরাসাসহ বহু বসত বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা। এদিকে লৌহজং উপজেলার বিভিন্ন স্থানসহ ভাঙনের মুখে পড়েছে সদর উপজেলার শিলই বাংলাবাজার থেকে দীঘিরপার পর্যন্ত পদ্মা তীরবর্তী এলাকা। এতে নদীতে বিলীন হয়েছে বহু কৃষিজমিসহ বসতভিটা।

এদিকে পাউবো মুন্সীগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী এ বিষয়ে জানান, নদীভাঙন কবলিত এলাকায় পাউবোর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙন এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য ১৪৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার নদীভাঙন রোধে কাজ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close