মাহমুদুল হাসান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি
রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিন, নয়ারচর, চরআন্ডা ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া লঞ্চঘাট এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ
রাঙ্গাবালীতে সংস্কারহীন সেই বেড়িবাঁধগুলো দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে পানি। সোমবার পূর্ণিমার জোয়ারে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিন, নয়ারচর, চরআন্ডা ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া লঞ্চঘাট এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে ওই এলাকার মৎস্যচাষি ও কৃষক।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় যশের ছোবলে ওই চার এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এ ছাড়া চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের বাঁধ অনেক আগ থেকেই ভাঙা ছিল। বাঁধগুলো সংস্কার না করায় জোয়ারের পানি বাড়লেই আতঙ্ক বাড়ে সেখানকার মানুষের।
বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কার না করায় সেখানকার স্থানীয়রা বাঁধটি সংস্কার করে। এলাকাবাসীর ৬০ হাজার টাকা চাঁদা তুলে দুই কিলোমিটার এবং ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদ খান রাজের ৭০ হাজার টাকা দিয়ে এক কিলোমিটার মোট তিন কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করেন। গত রবি ও সোমবার দুপুরে সংস্কারহীন এসব বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লোকালয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কলাপাড়া কার্যালয় থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় যশের তাণ্ডবে উপজেলার চালিতাবুনিয়া, চরলতা, গাইয়াপাড়া, কোড়ালিয়া, চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিনসহ কয়েকটি এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অরক্ষিত ওই ছয় গ্রামের মধ্যে পাঁচ গ্রামের পোল্ডারের অভ্যন্তরে জোয়ারের পানি প্রবেশ ঠেকাতে জরুরি আপৎকালীন পদক্ষেপ নেয় পাউবো। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার এবং যেখানে বিলীন হয়েছে, সেখানে পুনর্নির্মাণের কাজ করা হয়। তবে উপজেলার ১৪ কিলোমিটার ভাঙা বাঁধের আপৎকালীন জরুরি তিন কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। এখনো ১১ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার বাকি আছে।
নয়ারচর গ্রামের কৃষক কামরুল শিকদার বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদ খান রাজের উদ্যোগে এলাকাবাসী বাঁধ সংস্কার করায় আমরা চাষাবাদ করতে পারব বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু সেই বাঁধ ভাঙার কারণে ধানের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। শুধু আমার না এখানকার প্রায় ২০ জনের ধানের চারা পানিতে তলিয়ে আছে। এখন ধান চাষের সময়, চাষ না করতে পারলে আমরা কী খাব? বাঁধ সংস্কার না হলে নয়ার চর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়বে এবং অনাবাদি থাকবে প্রায় ২০০ একর জমি।
রাঙ্গাবালী ইউএনও মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ভাঙা কয়েকটি বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এরই মধ্যে। এখনো কয়েকটি এলাকার বাঁধ ভেঙে আছে। পাউবো ওইসব বাঁধ পরিদর্শন করেছে। আশা করছি, খুব দ্রুত বাঁধগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিবে পাউবো।
কলাপাড়া পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শওকত ইকবল মেহেরাজ বলেন, চরমোন্তাজ ইউনিয়নের নয়ার চর গ্রামের বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের শিডিউল হয়ে গেছে, দ্রুতকাজ শুরু হবে। ক্ষতিগ্রস্ত সবগুলো বেড়িবাঁধের কাজ চলছে, ঈদের কারণে কিছুদিন বন্ধ ছিল। আবার কাজ শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব জানান, ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো পরিদর্শন করেছ তিনি। বিষয়টি নিয়ে পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে পাউবো জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত শুরু করে।
"