গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
রংপুর চিনিকল
মাড়াই বন্ধ, বিপাকে আখচাষিরা
গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ হওয়ায় আখচাষিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকে গুড় তৈরি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও চাহিদা কম থাকায় তাও সম্ভব হচ্ছে না।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনায় চাষ করা প্রায় ৫ হাজার ২০০ একর জমিতে আখ দন্ডায়মান রেখে হঠাৎ করে চলতি বছরে এ চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চিনিকল কর্তৃপক্ষ অন্য চিনিকলে এসব আখ পাঠানোর ব্যবস্থা নিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই নগন্য। প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ আখ জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। জমি থেকে আখ কেটে জমিমুক্ত করতে না পেরে ধান বা অন্য ফসল চাষাবাদের প্রস্তুতিও নিতে পারছেন না চাষিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রংপুর চিনিকলের আওতাধীন আটটি সাবজোন এলাকার ৪০টি ক্রয়কেন্দ্রের আওতায় উৎপাদিত ৫২ হাজার টন আখ মাড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর মাড়াই শুরুর সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয় চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২ ডিসেম্বর হঠাৎ করেই রংপুর চিনিকলসহ দেশের ছয়টি চিনিকলে আখ মাড়াই স্থগিতের চিঠি আসে বিএসএফআইসির (বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প সংস্থা) সদর দপ্তর থেকে। পরে পরিবহন খাতেই কয়েক গুণ টাকা বেশি ব্যয় করে জয়পুরহাট চিনিকলে আখ প্রেরণের সিদ্ধান্তে অটল থাকে কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ দিন পরে আখ সংগ্রহ শুরু করে বর্তমানে প্রতিদিন ৭০০ টন আখ প্রেরণের কথা থাকলেও মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টন আখ প্রেরণ করা হচ্ছে জয়পুরহাট চিনিকলে। এভাবে চললে জমির সিংহভাগ আখই জমিতেই শুকিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কড়াকড়ি না থাকায় রংপুর চিনিকল জোন এলাকায় শতাধিক অবৈধ আখ মাড়াইকল কম দামে আখ কিনে গুড় তৈরির চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল মিলস গেট এলাকাতেই ১০ থেকে ১৫টি কলে গুড় মাড়াই চলছে।
রংপুর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আমিনুল ইসলাম জানান, শ্রমিক ও পরিবহন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়ে গেছে। একটি জমির আখও পড়ে থাকবে না। বর্তমানে পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ির সঙ্গে জয়পুরহাট চিনিকলের ১০টি গাড়ি এনে এখন থেকে প্রতিদিন ৭০০ টন আখ জয়পুরহাট চিনিকলে পাঠানো হবে।
"