আকবর হোসেন, মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা)

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২১

বিধবা আকলিমার জন্য ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি

আকলিমা বেগমকে ঘর করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে ‘ঘর নেই অসহায় বিধবা আকলিমা বেগমের’ এমন একটি খবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের নজরে আসে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে আকলিমা বেগমকে ঘর করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে অসহায় আকলিমা বেগমকে ঘর করে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এরই মধ্যে। নির্মাণকাজ তদারকি ও বাস্তবায়ন করবে মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া বিধবা আকলিমাকে আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ বসিয়ে দেওয়া হবে।

গতকাল সোমবার ঘর করে দেওয়ার জন্য জমি নির্ধারণ করতে সরেজমিন আকলিমার বাড়িতে যান মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের লোকজন। এ সময় উত্তর হাওলা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আকলিমাকে শীতের কম্বল তুলে দেওয়া হয়। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বরাদ্দের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তার নির্বাচনী আসন কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) দুই উপজেলার শত শত গরিব অসহায় পরিবারকে তার নিজস্ব তহবিল থেকে সবসময় সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ফেনুয়া মিজিবাড়ির বিধবা আকলিমা বেগমের ঘরের বিষয়টি জানতে পেরে মন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঘর করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর আগেই আকলিমার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর জিএমকে নির্দেশ দেন। দুই দিনের মধ্যে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে যায় বিধবার ঘরে।

আকলিমা বেগম বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ। আমার একটি ঘর নেই এ খবর আমাদের মন্ত্রী জানার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ঘর করে দেওয়াসহ সব সহযোগিতার আশ^াস দেন। আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। অসুস্থতার কারণে কারো কাছে যেতে পারিনি। বলতে পারিনি নিজের মনের কথা। পরবর্তী সময়ে লোক মারফত আমার দুঃখের কথা শুনে আমাকে সহযোগিতা করার আশ^াস দেন তিনি। আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিধবা ভাতা পাই, ১০ টাকা কেজিতে মাসে ৩০ কেজি চাল পাই। এত দিন ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। এখন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার কাছে টাকা না থাকায় ঘর ওয়্যারিং করতে পারিনি। আমাকে মন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ঘর ওয়্যারিং, লাইট-ফ্যান, বিদ্যুতের মিটার, সংযোগসহ সব করে দেওয়া হয়। আমি খুবই খুশি। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ। মহান আল্লাহ তাকে যেন দীর্ঘজীবী করেন।

বিধবা আকলিমা বেগমের বাড়িতে পৌঁছে তাকে ঘর করে দেওয়ার জন্য জমি নির্ধারণ করেন মনোহরগঞ্জের ইউএনও সোহেল রানা ও পিআইও মো. ওয়াসিম। এ সময় তারা আকলিমা বেগমের জীবনের গল্প শোনেন। তার বড় ছেলে প্রতিবন্ধী। গত ছয় মাস তার কোনো খোঁজ নেই। ছোট ছেলেটি লাকসামে একটি এতিমখানায় লেখাপড়া করছে। খেয়ে না খেয়ে জীবন চলে তার।

গতকাল আকলিমা বেগমের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কম্বল দেওয়া হয়। উত্তর হাওলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল হান্নান হিরো তাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ^াস দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তর হাওলা ইউপি সচিব জাহাঙ্গীর আলম সেলিম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের রিপন হোসেন, সাংবাদিক আকবর হোসেন, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মো. আলাউদ্দিন, সমাজসেবক আবুল বাশার, ছাত্রনেতা জোনায়েদ হোসেন জিসান, আশ্রাফুল ইসলাম শুভ, মামুন হোসেন প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close