কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

  ১৯ অক্টোবর, ২০২০

একসঙ্গে ৩ মেয়ের জন্ম দিয়ে দুশ্চিন্তায় ফাতেমা

একটি ছেলের আশায় একে একে আট মেয়ের জনক-জননী হলেন ফাতেমা-সাইফুর

একে একে জন্ম নিয়েছে পাঁচ মেয়ে সন্তান। ছেলে সন্তানের আশায় আবার গর্ভধারণ। কিন্তু এবারো ছেলে সন্তান নয়, একসঙ্গে জন্ম নিয়েছে তিন মেয়ে। দিনমজুর স্বামীর সংসারে সদ্য জন্ম নেওয়া তিন মেয়েসহ আট মেয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রসূতি মা ফাতেমা।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ নওদাপাড়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর বড় মেয়ে ফাতেমার বিয়ে হয় ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর গ্রামের দিনমজুর সাইফুর রহমানের সঙ্গে। ২০ বছরের সংসারে এক এক করে পাঁচ মেয়ের জন্ম হয়। বড় মেয়েকে এক বছর আগে বিয়ে দেন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন নবম শ্রেণি, একজন সপ্তম শ্রেণি এবং দুজন শিশু শ্রেণিতে পড়ে। হতদরিদ্র পরিবারে পাঁচ মেয়েকে নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে দিন কাটলেও একটি ছেলে সন্তানের আশায় আবার গর্ভধারণ করেন ফাতেমা। সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে বাবারবাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার হাসনাবাদের নওদাপাড়ায় মায়ের কাছে যান তিনি। গত ১২ অক্টোবর সেখানেই একসঙ্গে তিন মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। ফাতেমার দরিদ্র মা রহিমা বেগম মেয়ের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করলেও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেননি। একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে এক সপ্তাহ ধরে ফাতেমা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন বলে জানান তার স্বজনরা।

ফাতেমার মা রহিমা বেগম বলেন, ‘ছেলের আশায় একে একে পাঁচ মেয়ে হওয়ার পর এবার একসঙ্গে তিন মেয়ের জন্ম হইছে। ফাতেমার শরীর ও মন দুটাই খারাপ। এতগুলা বাচ্চা মানুষ করবে কেমন করি!’

সদ্য জন্ম নেওয়া তিন মেয়ের বাবা দিনমজুর সাইফুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ যা করছে তা ভালো হইছে। কখনো কামলা (দিনমজুরি) দিয়া আবার কখনো শাক-সবজি বিক্রি করি সংসার চালাই। কষ্ট করি হইলেও বাচ্চাদের মানুষ করার চেষ্টা তো করা লাগবে।’

নাগেশ্বরী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাতারা ইয়াছমিন বলেন, আট সন্তানের জননী হওয়ায় নীতিমালা অনুযায়ী তাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া সম্ভব নয়। তার স্বামীর বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলায় হওয়ায় তাকে ওই উপজেলায় ভিজিডি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

নাগেশ্বরীর ইউএনও নুর আহমেদ মাছুম বলেন, বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি। ওই নারী ফুলবাড়ী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। তারপরও আমাদের উপজেলা প্রশাসন থেকে তার জন্য সহযোগিতার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ফুলবাড়ীর ইউএনও মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, সে যেহেতু এখন নাগেশ্বরী উপজেলায় রয়েছে তাই যদি তার স্বাস্থ্যগত বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে হয় তাহলে নাগেশ্বরী প্রশাসন নেবে। ফুলবাড়ীতে ফিরলে সরকারি সুবিধার মধ্যে তাকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা নেব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close