পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

  ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদে ভাঙন

নির্ঘুম রাত কাটছে নদ পাড়ের বাসিন্দাদের

খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে ২নং কপিলমুনি ইউনিয়নের মালথ গ্রামের আরজ মোড়লের বাড়ি থেকে পদ্মাকান্দার রাস্তার ধার হয়ে সিলেমানপুর পালপাড়া অভিমুখী রাস্তা পর্যন্ত। ভাঙনে ইতোমধ্যে অসংখ্য ঘরবাড়ি, গাছ-গাছালি, ফসলের খেত নদে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিদিন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এ এলাকার বাসিন্দারা। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এদিকে মালথ ও সিলেমানপুরের নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।

সরেজমিন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কপোতাক্ষ নদের গভীরতা কমে যাওয়া, ভারী বর্ষণ ও কোটালের প্রভাবে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের মালথ গ্রামের আরজ মোড়লের বাড়ি হতে পদ্মাকান্দা সাবেক পিচের রাস্তার ধার হয়ে সিলেমানপুর পালপাড়া অভিমুখী রাস্তা পর্যন্ত নদের প্রায় তিন থেকে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কপিলমুনি ও হরিঢালী ইউনিয়ানের মালথ, সিলেমানপুর পালবাড়ীর অসংখ্য ঘরবাড়ি, মূল্যবান গাছ-গাছালি, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ভাঙনে একেকজনের ৫০ থেকে ১০০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকে ঘরবাড়ি হারিয়ে রাস্তার পাশে, আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে কিংবা অন্যত্র চলে গেছেন। সম্প্রতি ভারী বর্ষণে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে গত শনিবার দুপুরে কপিলমুনি মালথ ও সিলেমানপুরের নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। এ সময়ে সঙ্গে ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। পরিদর্শন কালে ইউএনও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের আশ্বাস, ১ হাজার বালুভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা, টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান।

ইউপি সদস্য এজাহার আলী গাজী জানান, স্থানীয়ভাবে কয়েকবার বাঁশের পাইলিং করে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভাঙনের ভয়াবহতা এতটাই বেশি কোনো পাইলিং কাজে আসছে না। ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোমাদ্দার জানান, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের যেন পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং এখন যারা আছে তারা যাতে থাকতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম সিদ্দিকী জানান, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬০০ মিটার ভাঙন স্থানে ১ হাজার বালু ভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ আক্তারুজ্জামান বাবু, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close