নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার বীজাগার ও কৃষিভিক্তিক পরামর্শ কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি বীজাগার দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ৯টি বীজাগারের মধ্যে পড়শী এলাকার বীজাগারটি সরকারি কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই। আর একটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। মুড়াপাড়া এলাকার বীজাগারটির জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল করা জমি উদ্ধারে আদালতে মামলা বিচারাধীন। এসব কারণে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি বীজাগারের জমি কেনা বাবদ ও ভবন নির্মাণবাবদ তৎকালীন সময়ে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এসব ভবনে কার্যক্রম না চলার কারণে ধীরে ধীরে বীজাগারের ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জলে গেছে সরকারের ২ কোটি টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের বেলদীর বীজাগারটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কাঞ্চন পৌরসভার কাঞ্চন বীজাগারটি বছরজুড়েই থাকে তালাবদ্ধ। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বীজাগারটির গেটেও সারা বছর থাকে তালা ঝুলানো। তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়ার বীজাগারটি থাকলেও চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পড়শী বীজাগারটির জমি থাকলেও নেই ভবন। নেই কোনো কার্যক্রম। ভোলাবো ইউনিয়নের আতলাপুরের বীজাগারটি বন্ধ থাকে। ভুলতা ইউনিয়নের মিঠাবোর বীজাগারটিরও একই অবস্থা। কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাঝিনা বীজাগারের কোনো অস্তিত্ব নেই। আর মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মুড়াপাড়া বীজাগারটি বেদখল হয়ে গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রূপগঞ্জের ৯টি বীজাগারের মধ্যে ছয়টি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কোনোটির পলেস্তরা খসে পড়েছে। কোনোটির দরজা-জানালা ভাঙা। দাউদপুর ইউনিয়নের বেলদী বীজাগারের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়েছে। নিচে আর্বজনার স্তূপ। ভবনের চারপাশে শ্যাওলা আর বট-পাকুড়ের ছড়াছড়ি। আর ভবনের সামনে স্তূপ করা ইট, বালু ও সুরকি। পরে জানা গেল, স্থানীয় লিটন নামে একজন এগুলো রেখে ব্যবসা করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেহা নূর বলেন, গোলাকান্দাইল ও কাঞ্চন এলাকার দুটি বীজাগার সংস্কার করা হয়েছে। বেলদী ও তারাবো পৌরসভার বীজগারগুলোও বেহাল হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"