মো. আবু সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আমতলীর আশ্রয়ণ প্রকল্প

জরাজীর্ণ ঘর, বৃষ্টি এলেই পড়ে পানি

আমতলীর পূর্ব কৃষ্ণনগর গ্রামে খাসজমির ওপর নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রকল্পসংলগ্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় সুবান্দী নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাতটি ব্যারাক। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় ৩ শতাধিক বাসিন্দা। এ অবস্থায় তারা সরকারের কাছে ঘর মেরামত ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, ২০০৪ সালে সরকারি অর্থায়নে উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব কৃষ্ণনগর গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধের বাইরে সুবান্দী নদীর তীরে খাসজমিতে পূর্ব কৃষ্ণনগর আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মিত হয়েছে। প্রকল্পে কবরস্থান, খেলার মাঠ, সমবায় সমিতির কার্যালয়সহ সাতটি টিনের ব্যারাক রয়েছে। প্রতিটি ব্যারাকে রয়েছে ১০টি করে কক্ষ। আবাসিক জমিসহ প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে একটি করে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পে ১০টি পরিবারের জন্য চারটি শৌচাগার ও দুটি গোসলখানা করা হয়েছিল।

প্রতিটি ব্যারাকে জন্য একটি করে গভীর নলকূপ ও বসানো হয়। কিন্তু নির্মাণের পর দীর্ঘ বছর পার হলেও সংস্কার হয়নি ব্যারাকগুলো।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাক ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ঘরের টিনে মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে। ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে পলিথিন বিছিয়ে তার ওপরে ইটচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। দরজা, জানালাগুলো ভেঙে গেছে। টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেছে। একাকার হয়ে গেছে। এগুলো ব্যবহার করতে পারছে না বাসিন্দারা।

অপরদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাক নদী তীরবর্তী হওয়ায় বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে তাদের পাউবোর বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নিতে হয়।

পূর্ব কৃষ্ণনগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক শাহিদা বেগম বলেন, ঘরের মধ্যে থাকতে পারি না। বৃষ্টি এলে টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। পানি ঠেকাতে হাঁড়ি, পাতিল দিয়েও লাভ হয় না। জোয়ারের সময় ছেলে মেয়ে নিয়ে রাস্তায় বসে থাকতে হয়। তিনি সরকারের কাছে ঘর মেরামত ও প্রকল্পের পেছনে নদী তীরবর্তী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি মো. আনসার মিয়া বলেন, সরকার ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্ষায় ঘরের ভেতরে পানি পড়ে, শীতে লাগে ঠান্ডা। প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে ভাসতে হয়। আমরা নানা সমস্যার মধ্যে থাকলেও সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

পূর্ব কৃষ্ণনগর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. মুছা মিয়া বলেন, এখানকার বাসিন্দারা অসহায় জীবনযাপন করছেন। ব্যারাকগুলো জরুরিভাবে মেরামত করা দরকার।

কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার বলেন, ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সরকার। কিন্তু নির্মাণের দীর্ঘদিন পেরুলেও সংস্কার না করায় এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করে যেসব ঘর জরাজীর্ণ তার তালিকা পাঠানো হবে। ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই ভাঙা ও জরাজীর্ণ ঘরগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। নতুবা আশ্রয়ণ বাসিন্দাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close