কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
‘ভুল’ চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু লাখ টাকায় রফাদফা
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তারের ‘ভুল’ চিকিসৎসায় মিশু বেগম (২৮) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে স্থানীয় তিন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে গত শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে ১ লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের বেতুয়া গ্রামের মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মিশু বেগম সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বালীগাঁও গ্রামে অবস্থিত জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত শুক্রবার বেলা ১১টায় ভর্তি হয়। পরে ওইদিন বিকাল ৩টায় মিশু বেগমের অপারেশন করা হয়। অপারেশন করেন ওই হাসপাতালে অনকলে আসা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যপক ডা. মাইনুল ইসলাম। সিজার করার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ওইদিন রাত ৮টায় মিশু বেগম মারা যায়। পরে স্থানীয় তিন নামধারী সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী পরিবারকে ঘটনা মিমাংসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধ্য করেন। ওই রাতেই ১ লাখ টাকায় রফাদফা শেষে রাত ১টায় মিশুর লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়। গতকাল
শনিবার সকাল ৯টায় তার দাফন সম্পন্ন হয়।
সূত্র আরো জানায়, ডা. মাইনুল ইসলাম নিয়মিত কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে বসেন এবং অনকলে উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে সিজার করেন।
এ ব্যাপারে মিন্টুর ছোট ভাই লিটন মিয়া জানান, সিজার করতে গিয়ে ডাক্তার জরায়ু কেটে ফেলে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার ভাবী মারা যায়। কিন্তু তারা গরিব পরিবার বলে স্থানীয় তিনজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ চাপাচাপি করে। পরে উপায়ন্তর না পেয়ে ১ লাখ টাকায় তারা বিষয়টি মেনে নেয়।
ডা. মাইনুল ইসলামের মুঠোফোনে ফোন করলে বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলে লাইন কেটে দেন।
জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. আসাদুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে টেলিফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। আপনি হাসপাতালে এসে কথা বলেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান আকন্দ জানান, লোকমুখে ঘটনার কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম মিজানুল হক জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"