প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ এপ্রিল, ২০২১

টিসিবির পণ্য কিনতে দীর্ঘ লাইন

মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৬২০ থেকে ৬৬০ টাকা দরে

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম চড়া। আসন্ন রমজান ও সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ সামনে রেখে আরেক দফা পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের ভরসা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাক সেল। কিন্তু তাতেও ভোগান্তি। রয়েছে মহামারি করোনার ভয়! পরিবারের সামান্য প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে এসব নিম্ন আয়ের মানুষকে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না কেউই। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছে সাধারণ মানুষ।

গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর খিলগাঁও রেলগেটসংলগ্ন ফ্লাইওভারের নিচে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কিন্তু তখনো টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক আসেনি। বেলা দেড়টার দিকে দেখা গেছে, লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বলতে কিছুই নেই। গাদাগাদি করে লাইন দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতারা। কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকের মুখেই তা দেখা যায়নি। লাইনের ছবি তোলার সময় কেউ কেউ জামার পকেটে ভাঁজ করে রাখা মাস্ক বের করে পরেছেন। টিসিবির পণ্য বিক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগ থেকে আমরা বিক্রি শুরু করেছি। অনেক মানুষ রয়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চায় না। এখন নিজেরা যদি নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন না হন, তাহলে আমরা কতবার বলে সচেতন করতে পারব? যার চিন্তা তাকেই করতে হবে।’

একই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর মৌচাক মোড়েও। এখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির ট্রাক থেকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। তবে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। তারা বলছেন, দুই কেজি তেল, দুই কেজি চিনি ও ৫ কেজি পেঁয়াজের জন্য দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কোনো মানে হয় না। এখানে সামান্য কিছু টাকা কমে পণ্য পাওয়া গেলেও যে পরিমাণ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তা খুবই কষ্টকর।

মৌচাকের ওয়াসাগলি থেকে পেঁয়াজ, চিনি, সয়াবিন তেল ও ছোলা কেনার জন্য এসেছেন বিলকিছ বেগম। তিনি ওই গলির কয়েকটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুই কেজি তেল, দুই কেজি চিনি ও দুই কেজি ছোলার জন্য দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখন ট্রাক এসেছে। আরো কত যে সময় লাগবে, তা আল্লাহই ভালো বলতে পারবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘মনে করেছিলাম ৫ লিটারের একটি তেল নিতে পারব। এখন তারা বলছে, ২ লিটারের বোতল ছাড়া আর নেই। একজন সর্বোচ্চ দুই লিটার করে নিতে পারবেন।’

একই চিত্র দেখা গেছে মতিঝিল শাপলা চত্বরের সামনে। লাইনে দাঁড়িয়ে আছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। গায়ে গা লাগিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সবাই। কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরলেও অনেকের মাস্ক ঝুলে ছিল থুতনিতে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাক থেকে একজন সাধারণ ক্রেতা ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ চার কেজি চিনি, ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ দুই কেজি মসুর ডাল, ১০০ টাকা দরে দুই থেকে পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল এবং ২০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে পারেন। এ ছাড়া ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি ছোলা ও ৮০ টাকা কেজি দরে এক কেজি খেজুর কিনতে পারেন।

উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৬২০ থেকে ৬৬০ টাকা দরে। খুচরায় প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩২ থেকে ১৩৫ টাকা দরে। পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে। বাংলা ট্রিবিউন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close