খুলনা প্রতিনিধি

  ০৪ মার্চ, ২০২১

‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ পরিকল্পনা

রূপসা নদীতে টানেল, ট্রামলাইন হবে খুলনায়

খুলনা নগরীকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে এবার সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। রূপসার নদীর তলদেশ থেকে টানেল তৈরি করে শহরকে নদীর পূর্ব পাশে বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ পরিকল্পনায় রূপসার পূর্বপাড়কে শহরের মধ্যে আনতে পারলে খুলনাকে দৃষ্টিনন্দন শহর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এক্ষেত্রে যোগাযোগব্যবস্থা থাকবে নদীর তলদেশে টানেলের মাধ্যমে। কম সময়ে ওপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। একইভাবে প্রশস্ত সড়কে চওড়া ফুটপাত ও উন্নত শহরের মতো ‘ট্রামলাইন’ করা হবে। উন্নত দেশের মতো যানজট এড়াতে ও সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কম ভাড়ায় নগরবাসী এতে যাতায়াত করতে পারবেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় থাকবে আধুনিক ট্রিটমেন্ট প্লান্ট।

গত মঙ্গলবার খুলনা প্রেস ক্লাবে আধুনিক খুলনা শহরের পরিকল্পনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুল ইসলাম। এ সময় কেডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. সাবিরুল আলম, পরিচালক (প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা) মো. শাহনুর আলম, অথরাইজড অফিসার মজিবুর রহমান, পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার রাতে খুলনাকে ‘হেলদি সিটি’ গড়ে তুলতে উপদেষ্টা কমিটির সভায় ‘স্বাস্থ্যকর শহর : সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণে নগর সরকার’ শীর্ষক কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনা করা হয়। সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক এতে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় খুলনাকে স্বাস্থ্যকর নগর হিসেবে গড়তে কী ধরনের নীতিগত পরিবর্তন আনতে হবে, নগরে সেবাদানকারী বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা কী হবে, স্বল্প মেয়াদে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রাথমিকভাবে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থায়নে এসব উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রয়োজনে সরকারি অর্থায়নেও পর্যায়ক্রমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। জানা যায়, বিশে^র পাঁচটি শহরকে হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। যার মধ্যে খুলনা শহর একটি। এরই মধ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে সব সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কারিগরি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে কীভাবে সমন্বয় হবে, উপদেষ্টা কমিটি সে বিষয়ে পরামর্শ দেবেন।

কেডিএ চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আমরা পরিকল্পিতভাবে খুলনা শহরকে গড়ে তুলতে চাই। এক্ষেত্রে রূপসায় টানেল করে নদীর দুপাশে শহরকে বাড়ানো, শহরের মধ্যে ট্রামলাইন করা ও শারীরিক-সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য খেলার মাঠ থাকবে। অগ্রাধিকার চাহিদা ভিত্তিতে একটা তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা যে ফান্ড দেবে তা দিয়ে কাজ করা হবে। বাকি কাজ সরকারের অন্য সংস্থা সিটি করপোরেশন, কেডিএ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড যে-ই করুক না কেন ডেভেলপমেন্ট হবে খুলনার। তিনি বলেন, ‘আমরা লাকি যে খুলনা সিটিকে সমন্বিত প্ল্যানিংয়ের আওতার পর্যায়ে একটা প্ল্যাটফর্মে আনা গেছে এবং আমরা তা নিয়ে কাজ করছি।’ এদিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোস্তফা সারওয়ার বলেন, খুলনা শহরকে পশ্চিমপ্রান্তে লম্বালম্বি বাড়ানো হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এরই মধ্যে শহর ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে পানি বিদ্যুৎ ইউটিলিটি সুবিধা এই ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত টেনে নিতে হচ্ছে। কিন্তু রূপসার তলদেশ থেকে টানেল করে নদীর ওপারে গেলে সেখানে সহজেই নতুন শহর সাজানো যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close