নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২১

নারায়ণগঞ্জে শব্দদূষণ নাকাল নগরবাসী

নারায়ণগঞ্জ দেশের অন্যতম জনবহুল জেলা। প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত এই জেলায় রয়েছে অনেক কল-কারখানা। রাজধানীর নিকটবর্তী জেলা হওয়ায় এবং দেশের অন্য জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কল-কারখানা নির্মাতাদের প্রথম পছন্দের স্থান হিসেবে নারায়ণগঞ্জ স্থান পায়। ফলে কল-কারখানার পাশাপাশি বাড়ছে মানুষের সমাগম। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহন।

জেলার চাষাড়ার মোড়ে প্রায়ই ট্রাফিক সিগন্যাল দেখা যায়। সিগন্যালের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে সারিবদ্ধভাবে থাকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। সিগন্যাল উঠে যাওয়ার আগ পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের সুযোগ নেই। তবু বিরতিহীন নিজ নিজ গাড়ির হর্ন বাজিয়ে চলে বাস, সিএনজি ও মোটরসাইকেল ও অন্য গাড়ির চালকরা।

এ পরিস্থিতি কেবল এক দিন বা শুধু চাষাড়ার মোড়ে নয়, বছরের পর বছর শহর কিংবা শহরতলীতে এমন লাগামহীন চলছে শব্দদূষণ। এ ছাড়া কল-কারখানা, ইট ভাঙার মেশিন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বাদ্যযন্ত্র ও মাইকের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই শব্দদূষণ চলছে।

গতকাল বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে কথা হয় বায়জিদ নামে এক যুবকের সঙ্গে। মূল সড়কের পাশেই একটি বিপণিবিতানে চাকরি করছেন তিনি। শব্দদূষণের কথা জিজ্ঞাসা করতেই তার চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ পরিলক্ষিত হয়। সেই বিরক্তি নিয়েই তিনি বলেন, এ আর নতুন কী? প্রতিদিনই চাকরির জন্য শহরে আসতে হয়। উচ্চ শব্দের হর্ন কান ঝালাপালা করে দেয়। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষই অযথা হর্ন বাজায়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো মনিটরিং না থাকায় দিন দিন এই দূষণ আরো বাড়ছে। লাগামহীন এই শব্দদূষণ চিকিৎসকদের কাছে নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত।

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, মানুষ বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী শব্দের কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ সাধারণত ২০-২০ হাজার হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না।

শব্দদূষণ মানুষের স্বভাবে পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শব্দদূষণের দ্বারা প্রভাবিত এলাকার মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠে। স্বাভাবিক আচরণে অস্বাভাবিকতা ও মানসিক উত্তেজনা দেখা যায়। মানুষকে ক্লান্ত মানসিক অবসাদগ্রস্ত ও কাজে অমনোযোগী করে তোলে। শব্দদূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চরক্তচাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। এই শব্দদূষণ যানজট, কল-কারখানা, সাউন্ড বক্স ও মাইকসহ বিভিন্ন মেশিন বা যন্ত্র থেকে উৎপত্তি হয়। এগুলো মনিটরিং করা জরুরি। মানুষের স্বাভাবিক শব্দ গ্রহণের ৪০-৫০ ডেসিবল। শহর বা শহরতলীর কোথাও কোথাও শব্দের মাত্রা ১০০-১২০ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close