নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা হাত নেই

খাল দখলদারদের হুশিয়ারি মেয়র আতিকের

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা হাত আর কারো নেই। খাল দখলদারদের হুশিয়ার করে তিনি বলেন, আপনাদের হাত যতই লম্বা হোক না কেন, জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা নয়।

গতকাল বুধবার উত্তরখানের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন মেয়র। মেয়র আতিকুল ইসলাম বেলা ১১টায় ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরখান কলেজিয়েট স্কুল মাঠে, দুপুর সাড়ে ১২টায় ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিসের সামনে এবং দুপুর আড়াইটায় ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাথাইড় মাঠে তিনটি পৃথক জনসভায় অংশ গ্রহণ করেন।

জনসভায় মেয়র বলেন, নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্প পাস করে দিয়েছেন। এখানকার রাস্তাগুলো চওড়া হবে, ১৩টি খাল আছে, এগুলোর অনেক জায়গায় দখল হয়ে আছে। এই ১৩টি খাল পুনরুদ্ধার করে উন্নয়ন করা হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘যাদের ক্ষমতা আছে, যারা শুধু নিজের চিন্তা করে, জনগণের কী হবে, তা চিন্তা করে না। এই খালগুলো জনগণকে নিয়ে আমরা উদ্ধার করব। জনগণ পাশে থাকলে খাল উদ্ধার হবেই। এই ঢাকা শহরের গার্জিয়ান আছে। আপনারাই তাদের নির্বাচিত করেছেন ভোটের মাধ্যমে। কেউ চাইলেই অবৈধভাবে কিছু করতে পারে না।’

মেয়র আরো বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করতে গেলে অনেক স্থাপনা ভাঙা পড়তে পারে। ডিএনসিসির ম্যাপিং অনুযায়ী রাস্তার দুই পাশে যার স্থাপনাই থাকুক না কেন, সেগুলো ভেঙে আমাদের রাস্তা করতে হবে। দখলকৃত রাস্তা, খাল উদ্ধারে তিনি জনগণের সহায়তা চান। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খাল উন্নয়নের যে ডিজাইন করেছি, সেখানে খালের দুই পাশে হাঁটার রাস্তা থাকবে, সেখানে গাছ লাগানো হবে, সাইকেল লেন থাকবে। এটি ব্যক্তিগত কারো জন্য নয়, বরং জনগণের জন্য।’

নতুন ওয়ার্ডগুলোর হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় সম্পর্কে মেয়র বলেন, এই এলাকার জন্য হোল্ডিং ট্যাক্সের রেট চার্ট করেছি, তবে কোনো ঘরবাড়ি থেকে এখনই ট্যাক্স নেব না; রাস্তা, ফুটপাত ইত্যাদি নির্মাণ করার পর ট্যাক্স নেব। কিন্তু বাণিজ্যিক প্লট, কারখানা ইত্যাদি থেকে অবিলম্বে ট্যাক্স নেওয়া হবে। ব্যবসা করবেন, ট্যাক্স দেবেন না, এটা হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, খাসজমিতে কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, পার্ক, মার্কেট ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণই আমাদের শক্তি। মেহনতী ও খেটে খাওয়া মানুষসহ সবার জন্য আমরা একটি সুন্দর ঢাকা শহর দেব। মেয়র আরো বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য আগে ড্রেন তৈরি করে তারপর রাস্তা নির্মাণ করব। ঝুলন্ত তারের জন্য প্রথমবারের মতো ডাক্টিং সিস্টেমের মাধ্যমে মাটির নিচ দিয়ে চলে যাবে।

উত্তরখানের এই তিনটি ওয়ার্ডে সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন ও প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নুল আবেদীন, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাইদুল ইসলাম মোল্লা, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিচ্ছি বললেন তাপস : ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল বুধবার ৫৮নং ওয়ার্ডের কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর ট্রাক স্ট্যান্ড পরিদর্শন এবং লাল মসজিদ, কলেজ রোড, শ্যামপুর এলাকার রাস্তাঘাট পরিদর্শনের পর এ কথা বলেন।

ডিএসসিসি মেয়রের সঙ্গে এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আমান উল্লাহ নুরী, ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামান, জিএম ট্রান্সপোর্ট বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ৫৪ ও ৫৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরসহ করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করছি, একটি করে সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র (কমিউনিটি সেন্টার) নির্মাণ করছি। উন্নয়নকে আমরা কিছু জায়গায় পুঞ্জীভূত না করে পুরো ডিএসসিসি এলাকাব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছি, আমাদের লক্ষ্য হলো ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে ঢাকাবাসীকে পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা দেওয়া।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close