নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ আগস্ট, ২০২০

জুলাইয়ে সড়কে ঝরেছে ৩৫৬ প্রাণ

বেশি দুর্ঘটনা ময়মনসিংহে, কম মৌলভীবাজারে

গত জুলাই মাসে ২৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় দেশব্যাপী ৩৫৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৩৪১ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ৬৪ এবং শিশু রয়েছে ৩৫ জন। এছাড়া একই সময়ে ১৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ২১ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এর বাইরে চারটি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আরো চারজন।

গতকাল বুধবার সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এ তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটি জানায়, এসব দুর্ঘটনায় ট্রাকযাত্রী ১৮ জন, বাসযাত্রী ১৪, পিকআপ যাত্রী ৯, কাভার্ডভ্যান যাত্রী চার, মাইক্রোবাস যাত্রী পাঁচ, প্রাইভেট কারযাত্রী ২৩, অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী তিন, ট্রলিযাত্রী ছয়, লরিযাত্রী দুই, সিএনজি যাত্রী ২২, ইজিবাইক-অটোরিকশা যাত্রী ২০, নসিমন-করিমন যাত্রী ১৩, ভটভটি-আলমসাধু-মাহেন্দ্র যাত্রী ৯, রিকশা ও রিকশাভ্যান যাত্রী ১১, লেগুনা যাত্রী সাত, টমটম যাত্রী এক, পাওয়ার ট্রলারে দুই ও বাইসাইকেল আরোহী পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠনটি জানায়, নিহতদের মধ্যে শিক্ষক সাতজন, চিকিৎসক (ঢাকা মেডিকেল) এক, সেনাসদস্য এক, পুলিশ সদস্য চার, রেলওয়ে পুলিশ এক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এক, স্বাস্থ্যকর্মী দুই, সাংবাদিক তিন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাত, ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার এক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ছয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী এক, সরকারি চাকরিজীবী আট, স্থানীয় ব্যবসায়ী ২১, পোশাকশ্রমিক ১৩, পাটকল শ্রমিক এক, চা শ্রমিক এক, প্রবাসী শ্রমিক দুই ও শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩৯ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর বেশির ভাগই ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এখানে ৭০টি দুর্ঘটনায় ৭৬ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে খুলনা বিভাগে। এ অঞ্চলে ২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৭ জন। একক জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ময়মনসিংহে। এখানে ১৬টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৯ জন। একক জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজারে। এখানে দুটি দুর্ঘটনায় নিহত একজন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো হলো ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবাদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

এ সময় তিনি দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করা, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য পার্শ্বরাস্তা তৈরি করা, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রেল ও নৌপথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করাসহ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

সূত্র আরো জানায়, জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি উভয়ই সামান্য কমেছে। জুন মাসে দেশে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় ৩৬১ জন নিহত হন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close