মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
সৈয়দপুরে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
শীতের শুরুতেই নীলফামারীর সৈয়দপুরে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। শীতে আগাম প্রস্তুতি নিতে লেপ তোশক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছে দোকানগুলোতে। অনেকে পুরোনো লেপ-তোশক মেরামত করতেও দেখা যায়।
শহরের রেললাইনের আশপাশ ও শহীদ ডাক্তার জিকরুল হক সড়ক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লেপ-তোষকের সব দোকানে ছিল কারিগরদের ব্যস্ততা। দোকানিরাও অর্ডার নিচ্ছেন পর্যায়ক্রমে। গভীর রাত ও ভোরে অনেকটা শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে যে যার সাধ্যমতো শীত মোকাবেলার প্রস্ততি নিচ্ছেন। শীতে কাতর লোকজন রাতের বিছানায় টেনে নিচ্ছেন কাঁথা বা কম্বল। সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের সবুর আলীর স্ত্রী রেহেনা খাতুন জানান, আমরা গরিব মানুষ, কম্বলের যে দাম সেটা কিনার সামর্থ নাই। এ কারনে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি শিমুল তুলা ৪০০ টাকা ও বিচি ছাড়া শিমুল তুলার কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব তুলায় বালিশ তৈরি করেন সমাজের ধনী লোকেরা। আর গার্মেন্টস তুলায় বালিশ, লেপ ও তোশক বানিয়ে নেন মধ্যবিত্ত ও গ্রামের গরিব মানুষেরা। তবুও বর্তমান বাজারে ৪ হাত প্রস্থ ও ৬ হাত দৈর্ঘ্যরে লেপ তৈরি করতে ১২০০ টাকা খরচ হচ্ছে। যা গত শীত মৌসুমের চেয়ে ১/২ শত টাকা বেশি। বাজারে কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ২০ থেকে ৪০টাকা, কালো রাবিশ তুলা ২০ থেকে ৪০ টাকা, সাদা তুলা ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে দামে বিক্রি হচ্ছে । সৈয়দপুর পৌর এলাকার ৬ নং ওয়াডের জুম্মাপাড়ার বাসিন্দা মাইনুল হক জানান, বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবার লেপ-তোশক তৈরির খরচও বেড়েছে। তাই পুরোনো লেপ খুলে নতুন করে তৈরি করার জন্য দোকানে নিয়ে এসেছি। তুলার খরচ বাদ দিয়ে কাপড় ও মজুরি বাবদ ১১০০ টাকায় বানাতে দিতে হচ্ছে দোকানীদের।
উপজেলার কামারপুকুর চিকলীর বাসিন্দা রাজু আহমেদ জানান, বর্তমান মৌসুমে বেশি শীত হতে পারে। তাই আগে থেকেই লেপ তৈরির জন্য দোকানে এসে অর্ডার দিচ্ছি। সৈয়দপুর পৌর শহরের গাউসিয়া বেডিং স্টোরের মালিক আসগর আলী জানান, শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। গতবারের চেয়ে এবারে ক্রেতা তুলনামূলক বেশি।
তিনি আরও বলেন, আকার অনুযায়ী লেপ-তোশক তৈরিতে দাম ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। একটি লেপ তৈরি করতে মজুরি ২০০ টাকা। এছাড়া তোশক ২৫০ টাকা, বালিশ প্রতিটি ১০০ টাকা এবং জাজিম তৈরিতে ১০০ টাকা হারে মজুরি নেওয়া হচ্ছে। এই মজুরির হার অন্য সময়ের চাইতে কিছুটা বেশি।
"