‘জেলা পরিষদ’ পুনর্গঠন না, পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক স্থানীয়দের ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে পার্বত্য জেলা পরিষদের ‘নির্বাচন’ ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকে করতে হবে। পার্বত্য জেলা পরিষদের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে যাতে স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালি বঞ্চিত না হয় সেজন্য নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি- এমন দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) নেতারা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটিতে ৬২তম শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানান পিসিপির নেতারা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়নসহ সরকারি চাকরিতে ও দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ শতাংশ কোটা চালু এবং আদিবাসী মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা চালু করার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে জিমনেসিয়াম মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রাঙামাটির প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা ঘুরে এসে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন রাঙামাটি জেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।

সমাবেশে রাঙামাটি জেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সভাপতি জিকো চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপন ত্রিপুরা, রাঙামাটির যুব সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উলিচিং মারমা। স্বাগত বক্তব্য দেন রাঙামাটির পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সাংগঠনিক সম্পাদক।

সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ সবসময় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের সময়ে আদিবাসীদের বরাদ্দ ৫ শতাংশ কোটা থেকে ১ শতাংশে নিয়ে আসা হয়। যা ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরির সুযোগ সুবিধা থেকে আদিবাসীরা বঞ্চিত হবে। আদিবাসীদের এ কোটার অধিকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতেও উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে পুনরায় ৫ শতাংশ কোটা আবার চালু করতে হবে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারে মাধ্যমে আদিবাসীদের নিজের মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা চালু করতে হবে।

বক্তরা আলো বলেন, বহু বছর ধরে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের নেতাকর্মীরা সুযোগ-সুবিধা পায় তেমনি বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাদের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে। এখানকার যারা স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি বসবাস করেন তারা সর্বদা জেলা পরিষদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। আওয়ামী সরকারের সময়ে জেলা পরিষদের মাধ্যমে চাকরি ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ১৫ লাখ, ২০ লাখ এমনকি ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে পরিষদের থেকে শিক্ষককের চাকরি নিয়েছে টাকার বিনিময়ে। শুধু তাই নয়, দুর্গম এলাকা সাজেক, জুরাছড়ির দুর্গম পাহাড়ে শিক্ষকের চাকরি নিয়ে পরে বর্গা দেওয়া হয় সেখানকার ছাত্রদের। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মনোনয়নের কারণে। সুতরাং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মাধমে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক এখানকার স্থানীয়দের ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে জেলা পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

"