প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১০ আগস্ট, ২০২৪

স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন দাবিতে বিক্ষোভ

পুলিশ বাহিনীকে যেন কোনো দলীয় সরকার তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে। পুলিশের সব থানা, ফাঁড়ি এবং ট্রাফিক বক্স আধুনিকায়ন করতে হবে এবং অধস্তন অফিসারদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং সব ব্যারাকে বিদ্যমান আবাসন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে ব্যারাকগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে। এমন ১১ দফা দাবিতে বান্দরবানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ২ এপিবিএনের সদস্যরা। যতদিন পর্যন্ত এসব দাবি মেনে নেওয়া হবে না ততদিন পর্যন্ত কাজে ফিরবে না বলে জানান বিভিন্ন স্তরের পুলিশ বাহিনির সদস্যরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বান্দরবান : গত বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা শহরের মেঘলাস্থ ২ এপিবিএন কার্যালয়ের সামনে এসব দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে এপিবিএনের সদস্যরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি। অফিসারদের স্বার্থ আদায়ের জন্য দিনের পর দিন আমরা ব্যবহার হয়ে আসছি। সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায়সহ কালো টাকার পাহাড় গড়ার জন্য আমাদের জনগণের শত্রু বানিয়েছে। তাদের অর্ডার মানতে গিয়ে আজ আমাদের অনেক ভাই নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। আজ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের।

চট্টগ্রাম : গত বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সাদা পোশাকে কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘অধস্তন পুলিশ সংস্কার প্ল্যাটফর্ম’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইনস মূল ফটকের সামনেই নিরাপত্তায় ছিলেন সেনাসদস্যরা। ভেতরে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে সাদা পোশাকে কনস্টেবল থেকে শুরু করে উপপরিদর্শক পদমর্যাদার কয়েকশ পুলিশ সদস্য বিক্ষোভ করছিলেন। ঠিক তাদের বিপরীতেই দাঁড়ানো ছিলেন সিএমপির ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা।

মো. আনোয়ার হোসেন নামে একজন কনস্টেবল বলেন, ‘আমাদের এক ব্যাচমেট জাস্ট একটা কমেন্ট করেছিল ছুটি চেয়ে। তার চাকরি অলরেডি চলে গেছে। আমরা এতটাই অসহায়। আমাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করারও সুযোগ ছিল না।’ আরেকজন কনস্টেবল বলেন, ‘আমার দাবি হলো আমরা নির্বাচিত কোনো সরকারের অধীনে থাকতে চাই না। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা চাই রাজনৈতিক কোনো দল যেন আমাদের শোষণ করতে না পারে। আমরা মাঠ পর্যায়ের চাকুরে। আমাদের ব্যবহার করে, লেলিয়ে দিয়ে, রাস্তায় ফেলে অনেক পুলিশ অফিসার এখন গা ঢাকা দিয়েছেন। আমরা তাদের আর দেখতে চাই না।’

একপর্যায়ে বিক্ষোভকারী পুলিশ সদস্যরা পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে বসে পড়েন। ওই সময় তারা ‘বিসিএসের দালালি, চলবে না চলবে না’, ‘মন্ত্রীদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, আইজিপির দালালি, চলবে না চলবে না, হৈ হৈ রৈ রৈ, দালাল ডিবি হারুন গেল কৈ, আমার ভাই মরল কেন, জবাব চাই জবাব চাই’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

সিলেট : গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের মীরের ময়দান পুলিশের পোশাক বিহীন অবস্থায় অধস্তন কয়েকশ কর্মকর্তা-কর্মচারী পুলিশ সংস্কার প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এ বিক্ষোভ করেন। বক্তারা বলেন, দলাদলিতে আমরা থাকতে চাই না। পুলিশ বাহিনীর দালালদের কারণে আমরা এবং আমাদের পরিবার এখন অনিরাপদ। আপনারা দেখেছেন কীভাবে অনেক পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এসব ছাত্রদের কাজ না। সেসময় তারা ‘বিসিএসের দালালি, চলবে না চলবে না’, ‘মন্ত্রীদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আমার ভাই মরল কেন, জবাব চাই জবাব চাই, এমন বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

লক্ষ্মীপুর : গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্সে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ, সারা দেশে পুলিশ হতাহতের জন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দায় রয়েছে বলে তারা মনে করেন। এ জন্য তারা ‘দায়িত্বহীন’ পুলিশ কর্মকর্তাদেরও বিচার চান।

নাটোর : নাটোরে একই দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ বাহিনীতে সংস্কার, ‘কলঙ্কিত’ বর্তমান পোশাকের রং পরিবর্তন করে নতুন রঙের পোশাক প্রদান, সিপাহী থেকে আইজি একই পোশাক অনুমোদনসহ ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ডিআই ওয়ান জালাল উদ্দীন, এসআই সাঈদ হোসেন ও সিপাহী হাসান প্রমুখ। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সুনামগঞ্জে একই দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close