গাইবান্ধা প্রতিনিধি
চলমান পরিস্থিতি ও দেশব্যাপী কারফিউর প্রভাব
গাইবান্ধায় কমেছে সবজির দাম
* সবজি ভেদে মণপ্রতি ৫০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে গেছে * প্রতিদিন ৫ হাজার ৮৫০ টন সবজি উৎপাদন এবং বাজারজাত করা হয় * সবজির আমদানি থাকলেও পর্যাপ্ত পাইকারি ক্রেতা না আসায় বিক্রি করা নিয়ে বিপাকে কৃষক

চলমান পরিস্থিতি ও দেশব্যাপী কারফিউর কারণে গাইবান্ধায় শাকসবজির বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কয়েকদিন ধরে অনিয়মিত যানবাহন চলাচলের কারণে স্থানীয় হাট-বাজারে পাইকারি ক্রেতা কমে গেছে। এতে কৃষকরা উৎপাদিত শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে সবজি ভেদে মণপ্রতি ৫০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে গেছে।
জেলার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে শাকসবজি উৎপন্ন হয়। এখানকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হয়। এরই মধ্যে উত্তরাঞ্চলের গোবিন্দগঞ্জ তৃতীয় বৃহত্তম পটল উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারী স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৪ হাজার কৃষক ৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে পটোল, বেগুন, চিচিঙ্গা, বরবটি, মুখিকচু, কাঠকচু, লতিকচু, লাউ, পেঁপে, কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন হয়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ হাজার ৮৫০ টন সবজি উৎপাদন এবং বাজারজাত করা হয়।
জেলার বিভিন্ন স্থানীয় সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রচুর সবজির আমদানি বা সরবরাহ থকলেও পর্যাপ্ত পাইকারি ক্রেতা না আসায় কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌর বাজারে পটোল বিক্রি করতে আসা দরবস্ত ইউনিয়নের কৃষক সোরাফ আলী বলেন, কয়েকদিন আগে পটোল বিক্রি করেছি ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা মণ দরে। এখন সেটি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় নেমে এসেছে। তারপর ক্রেতা কম থাকায় বিক্রির জন্য বেশ সময় ধরে বসে থাকতে হচ্ছে।
সাদুলপুর উপজেলার ধাপেরহাটে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষক হুমায়ন ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম পড়ে গেছে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে পাইকারি ক্রেতা কম আসায় উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছে না কৃষকরা। ঘণ্টার ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম মণপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তারপরও ক্রেতা মিলছে না।
অন্যদিকে পাইকাররা বলছেন, চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ প্রায় তার ওপর দেশজুড়ে কারফিউর করণে কাঁচামাল কিনে অনিশ্চয়তায় আর শঙ্কায় থাকতে হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত ট্রাক ভাড়া দিয়ে মোকামে মাল নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে নানা ঝুঁকি ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, কৃষক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সবজি পরিবহনের ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়ছেন বিষয়টি শুনেছি। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।
"