মো. শাহ আলম, খুলনা

  ০৩ জুন, ২০২৩

কেসিসি নির্বাচন

মামলার বেড়াজালে ৩৬ প্রার্থী

আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৩৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। যাদের প্রায় অর্ধেকের নামে আছে- হত্যা, হত্যাপ্রচেষ্টা, নাশকতা, ডাকাতি, নারী নির্যাতন, চেক ডিজঅনার, প্রতারণাসহ একাধিক মামলা। ১৮ থেকে ২৫টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে একজন প্রার্থীর নামে। তবে এসবের বেশিরভাগ মামলাই হেয়প্রতিপন্ন ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা। আর বিশিষ্টজনদের মতে, সিদ্ধান্ত নেবেন ভোটাররা।

প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামার তথ্য মতে, মামলা চলমান রয়েছে এমন প্রার্থী রয়েছেন ৩৬ জন। মামলা থেকে খালাস এবং অব্যাহতি পেয়েছেন প্রায় ৩০ জন। এর মধ্যে এক নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতপন্থী কাউন্সিলর প্রার্থী এসএম আজিজুর রহমান স্বপনের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা চলমান। একটি মামলায় অব্যাহতি এবং একটিতে খালাস পেয়েছেন তিনি। দুই নম্বর ওয়ার্ডের এসএম মনিরুজ্জামানের নামে দুটি চেক ডিজঅনার মামলা বিচারাধীন। তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ইব্রাহিম মার্শালের নামে একটি ডাকাতি মামলা বিচারাধীন। চার নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আশরাফ হোসেনের নামে প্ররোচণাসহ দুই মামলা চলমান। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. কবির হোসেন কবু মোল্যার নামে হত্যাচেষ্টা ও ভীতি প্রদর্শনের দুই মামলা চলমান এবং গোলাম রব্বানীর নামে হত্যা মামলাসহ দুই মামলা বিচারাধীন। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. ফিরোজ আলমের নামে মাদক মামলা বিচারাধীন এবং একই ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতনের দুই মামলা রয়েছে। ছয় নম্বর ওয়ার্ডের মো. শামসুল আলম মিল্টনের নামে হত্যাচেষ্টাসহ দুই মামলা রয়েছে।

এছাড়া সাত নম্বর ওয়ার্ডের মো. সুলতান মাহামুদের নামে হত্যা মামলা তদন্তাধীন। আর নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ফজলুল কবির টিটোর নামে হত্যা মামলাসহ ১৫টি এবং মো. মাহফুজ পারভেজ মুন্নার নামে একটি মামলা চলমান। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম লিটনের নামে হত্যাচেষ্টাসহ তিনটি মামলা চলমান, কাজী তালাত হোসেনের মামলা থাকলেও বিস্তারিত হলফনামায় উল্লেখ করেননি এবং এ এস এম সায়েম মিয়ার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা চলমান রয়েছে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. শফিকুল আলমের নামে হত্যাচেষ্টাসহ ১৩টি মামলা চলমান। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ মাহফুজুর রহমানের হত্যাচেষ্টা মামলা বিচারাধীন। আলী সিদ্দিক ও একই ওয়ার্ডের মো. নাসির সরদারের নামে দুই মামলা চলমান। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসুফ আলী খান, শামীম পারভেজ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাশিউর রহমান, ইমরান হোসেন, জাকির হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মনিরুল ইসলামের নামে ১৮টি মামলা রয়েছে। আর জাকির হোসেন বিপ্লব ও বিএনপিপন্থী প্রার্থী আশফাকুর রহমান কাকনের নামে দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা চলমান। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ মো. গাউসুল আজমের বিস্ফোরক মামলাসহ চারটি মামলা বিচারাধীন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইমরুল হাসানের নামে দুটি মামলা চলমান। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুব কায়সারের নামে হত্যাচেষ্টাসহ তিনটি মামলা চলমান এবং শেখ মো. আনোয়ারুল কবির ফিরোজের নামে বিদ্যুৎ আইনে চারটি মামলা রয়েছে।

২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মাওলা শানুর নামে মামলা থাকলেও হলফনামায় ধারাগুলো উল্লেখ নেই। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের নামে ২৫টি মামলা চলমান। এছাড়া একই ওয়ার্ডের আলহাজ মো. পিটু মোল্লার নামে প্রতারণা মামলা, মো. আরিফ হোসেনের নামে একটি এবং মো. হাছান চাঁনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা চলমান।

তবে মামলার বিষয়ে প্রার্থীরা জানান, রাজনৈতিকভাবে দমন পীড়ন করার জন্য মামলার শিকার হতে হয়েছে। আবার প্রতিপক্ষ সুবিধা নিতে দিয়েছেন মামলা। শত্রুতামূলকও মামলা হয় বলেন কেউ কেউ। তবে সবার বক্তব্য এতে নির্বাচনে অসুবিধা হবে না। কারও কারও মতে এভাবেই চলে আসছে।

এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, মামলা থাকলেই যে জনপ্রতিনিধি হওয়া যাবে না, এটা ঠিক নয়। এছাড়া মামলা থাকলেই তাকে দোষী বলা যাবে না। এমন কি নিম্ন আদালতের রায়ে কারও সাজা হলেও তাকেও দোষী বলা যায় না। কেননা তার আপিল করার সুযোগ থাকে। তবে সব কিছু সিদ্ধান্ত নেবেন ভোটররা। তারাই ভাববেন, কে কেমন ও কাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close