ক্রীড়া ডেস্ক
ফাইনালে বার্সার মুখোমুখি রিয়াল
স্প্যানিশ লা লিগায় ছন্দপতন হলেও অন্য টুর্নামেন্টে ঠিকই দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছে বার্সেলোনা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পর স্প্যানিশ সুপার কাপেও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে কাতালান ক্লাবটি। গত বুধবার রাতে সৌদি আরবে সুপার কাপের সেমিফাইনালে অ্যাটলেটিক বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সা। এ জয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট কাটল হান্সি ফ্লিকের দল। আগামীকাল রবিবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বার্সেলোনার প্রতিপক্ষ রিয়াল। তাই অপেক্ষা এখন এল ক্লাসিকোর।
প্রথম মিনিটের পর থেকেই আসছিল একের পর এক সুযোগ। আক্রমণ ভাগের ব্যর্থতায় সেগুলো কাজে লাগাতে পারছিল না রিয়াল মাদ্রিদ। মায়োর্কার প্রতিরোধ ভেঙে দ্বিতীয়ার্ধে দলকে এগিয়ে নিলেন জুড বেলিংহ্যাম। তার ঠাণ্ডামাথার ফিনিশিংয়ের পর যোগ করা সময়ে আরো দুটি গোল করে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিল কার্লো আনচেলত্তির দল। চার দলের টুর্নামেন্টের ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৩-০ গোলে জিতেছে রিয়াল।
আগামীকাল রবিবার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ রেকর্ড ১৪ বারের বিজয়ী বার্সেলোনা। সেদিন জিতলে এ শিরোপা জয়ের হিসেবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের পাশে বসবে রিয়াল (১৩)। দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় রিয়াল। লুকাস ভাসকেসের শট ঠেকিয়ে দেন মায়োর্কা গোলরক্ষক ডোমিনিক গ্রাইফ। পরের মিনিটে রদ্রিগোর শটও ফিরিয়ে দেন তিনি। সপ্তম মিেিন্ট গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে। বল বেরিয়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ৪ মিনিট পর অহেলিয়া চুয়ামেনির শট ঠেকিয়ে দেন গ্রাইফ।
১২ মিনিটে পাবলো মাফেয়োর সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান ভিনিসিউস জুনিয়র। ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে লা লিগায় দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড উসকানিতে তেতে গিয়ে মৃদু টোকা মারেন মায়োর্কার আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারের বুকে। দুই খেলোয়াড়কেই সাবধান করে দেন রেফারি, কার্ড দেখাননি কাউকেই। ১৫ মিনিটে আবারও দারুণ রিফ্লেক্সে রিয়ালকে হতাশ করেন গ্রাইফ। জটলার মধ্য থেকে জুড বেলিংহ্যামের জোরালো শট তিনি দেখতে পান অনেক পরে। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বল।
খেলার ধারার বিপরীতে ৩ মিনিট পর গোল হজম করতে বসেছিল রিয়াল। সের্গি দারদেরের ক্রসে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি কাইল লারিন। ৩০ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ডি-বক্সের মাথা থেকে শট নেন লারিন।
তবে বল চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ৪৫ মিনিটে এমবাপের ক্রস হোয়ান মোহিকা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে দারুণ সুযোগ পান বেলিংহ্যাম। কলম্বিয়ান ডিফেন্ডারের অভাবনীয় ব্যর্থতায় একটু চমকে যাওয়ায় প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেরি করে ফেলেন তিনি। তাই একটুর জন্য বলের নাগাল পাননি ইংলিশ মিডফিল্ডার।
গোলশূন্য প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১৫টি শট নিয়েও সাফল্যের দেখা পায়নি রিয়াল। আক্রমণাত্মক ফুটবলে মায়োর্কাকে বেশ চাপে রাখা রিয়ালের গোলের অপেক্ষা শেষ হয় ৬৩ মিনিটে। ভিনিসিউসের কাটব্যাকে রদ্রিগোর হেড ফেরে পোস্টে লেগে। ফিরতি বলে এমবাপের বুলেট গতির শট ঠেকান গ্রাইফ। কিন্তু বেলিংহ্যামের শট আর আটকাতে পারেননি গোলরক্ষক, তরুণ মিডফিল্ডারের ঠাণ্ডামাথার গড়ানো শট জড়ায় জালে। চলতি মৌসুমে ক্লাবের হয়ে এটি বেলিংহ্যামের নবম গোল। সাতটি গোল করেছেন তিনি লা লিগায়, অন্যটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। ৭৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার চমৎকার সুযোগ হাতছাড়া করেন ভিনিসিউস। শট লক্ষ্যেই রাখতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে রদ্রিগোর শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি গ্রাইফ।
যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে নিজেদের ভুলেই সব আশা শেষ হয়ে যায় মায়োর্কার। প্রতিপক্ষের একটি দুর্বল শট আটকাতে গিয়ে নিজেদের জালে পাঠিয়ে দেন ডিফেন্ডার ভালিয়েন্ত। এর ৩ মিনিট পর তৃতীয় গোলটির দেখা পায় রিয়াল। ডান দিক থেকে ভাসকেসের বাড়ানো ক্রস গোলমুখে দূরের পোস্টে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ার শটে বল জালে পাঠান রদ্রিগো। দলকে ফাইনালে নেওয়ার সঙ্গে গোল দিয়ে নিজের জন্মদিন উদযাপন করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
"