ক্রীড়া ডেস্ক
টটেনহামে থামল লিভারপুলের জয়রথ
ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের চলতি মৌসুমে সবচেয়ে ধারাবাহিক লিভারপুল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে অল রেডরা। ঝড়ের বেগে ছুটতে থাকা লিভারপুলকে অবশেষে থামতে হলো। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৬ ম্যাচ পর দলটি পেল পরাজয়ের স্বাদ। গত বুধবার রাতে ইংলিশ লিগ কাপের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহাম হটস্পার। এ জয়ে ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি। অবশ্য হারলেও ফাইনালের আশা শেষ হয়ে যায়নি লিভারপুলের। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে তাদের।
টটেনহাম হটস্পার স্টেডিয়ামে মহারণ অমীমাংসিত থেকে যাওয়ার আশঙ্কা জাগিয়েছিল। কিন্তু শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন লুকাস বার্গভাল। করেন জয়সূচক গোল। গোলে সহায়তা করেন ডমিনিক সোলাঙ্কে। ম্যাচের বয়স তখন ৮৬ মিনিট। শেষ দিকে গোল হজম করায় খুব স্বাভাবিকভাবেই তা ফিরিয়ে দিতে পারেনি লিভারপুল।
এক গোলের এ ঘাটতি পোষাণোর সুযোগ অবশ্য আছে আর্নে স্লটের দলের। কেননা ফিরতি লেগটা তারা খেলবে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ড স্টেডিয়ামে। প্রথম লেগে হারের পর লিভারপুলের ডাচ কোচ টটেনহামকে যেন সেই বার্তাটাই দিয়ে রাখলেন। স্লট বলেছেন, ‘এ ধরনের প্রতিযোগিতায় প্রথম লেগের ফলই শেষ কথা নয়।’ লিভারপুল কোচ যোগ করেন, ‘এ ম্যাচটা আমাদের ভালো কাটেনি। দুই অর্ধেই খারাপ খেলেছি। অনেক ?সুযোগ হাতছাড়া করেছি। শেষ দিকে গোল হজম করেছি। অন্তত ড্র করা উচিত ছিল আমাদের। যা হোক, আমাদের দ্বিতীয় লেগের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ঘরের মাঠেই আমরা এ হারের জবাব দেব।’
ম্যাচের শেষ দিকে একটি ‘কড়া ট্যাকল’র দায়ে সুইডেনের মিডফিল্ডার লুকাস বেরিভালকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড না দেখানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফন ডাইক। ওই ঘটনার মিনিট খানেক পরই ব্যবধান গড়ে দেন ১৮ বছর বয়সি বেরিভাল। দ্বিতীয়মার্ধের মাঝামাঝি সময়ে লুইস দিয়াসকে ফাউল করায় আগেই একটি হলুদ কার্ড দেখেছিলেন বেরিভাল। তাই শেষ দিকের ঘটনায় লিভারপুল ডিফেন্ডার কস্তাস সিমিকাসকে ওই ট্যাকল করায় হলুদ কার্ড পেলে ১০ জনের দলে পরিণত হতো টটেনহাম।
কিন্তু রেফারি স্টুয়ার্ট অ্যাটওয়েল খেলা চালিয়ে যান এবং এরপরই ডমিনিক সোলাঙ্কির পাস ধরে জালে বল পাঠান বেরিভাল। সেই সময়ে সাইডলাইনের বাইরে চিকিৎসা চলছিল গ্রিক ডিফেন্ডার সিমিকাসের।
এরপর নির্ধারিত সময়ের চার ও যোগ করা সময়ের সাত মিনিট সময় পেলেও, গোলটি আর শোধ করতে পারেনি লিভারপুল। ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ফন ডাইকের কণ্ঠে হতাশার সঙ্গে ঝরল ক্ষোভ। অবশ্যই সেটা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড হতো। ঘটনাটা প্রায় পরিষ্কার এবং এর এক মিনিট পরই সে (বেরিভাল) জয়সূচক গোলটি করে। বিষয়টা ঠিক এমনই। আমার মতে, রেফারি একটা ভুল করেছে এবং আমি তাকে সেটা বলেছিও। যদিও তিনি তেমনটা ভাবেন না। ঘটনাটা প্রায় পরিষ্কার এবং সাইডলাইনের সবাই সেটা জানে।’
তবে শুধু ওই কারণেই নিজেদের হারতে হয়েছে, এমনটাও অবশ্য দাবি করছেন না ডাচ ডিফেন্ডার ফন ডাইক। সেখানে একজন লাইন্সম্যান ছিল, চতুর্থ অফিসিয়াল ছিল, ভিএআরও ছিল তারপরও সে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পায়নি। আমি বলছি না যে, এ কারণেই আমরা হেরেছি। তবে খেলায় এটা একটা বড় মুহূর্ত ছিল। লিভারপুল কোচ আর্না স্লটের ভাবনাও ভিন্ন নয়। বরং তার প্রতিবাদ আরো জোরাল। ‘রেরফারির নেওয়া ওই সিদ্ধান্ত ম্যাচের ফলে অনেক বড় প্রভাব ফেলেছে।’ এ হারের হতাশা নিয়ে, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ঘরের মাঠে ফিরতি লেগ খেলবে লিভারপুল।
"