ক্রীড়া প্রতিবেদক
তামিমের আগ্রাসী ফিফটি
তৌফিকের ঝড় সামলে চট্টগ্রামের জয়
নাঈম হাসানের বলে টানা ২ চারের পর ছক্কার চেষ্টা করলেন তৌফিক খান। কিন্তু সীমানা পার করতে পারলেন না। ডিপ মিড উইকেট ডানে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিলেন হাসান মুরাদ। জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা তৌফিকের বিদায়ে স্বস্তি ফিরল চট্টগ্রাম দলে। পরে সহজেই বাকি কাজটুকু সেরে নিল তারা।
গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে তামিম ইকবালের ঝড়ো ফিফটির জবাবে তাণ্ডব চালিয়ে সিলেট বিভাগের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তৌফিক। তাকে ফেরানোর পর ১২ রানের জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে গতকাল অন্য ম্যাচে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে বরিশাল বিভাগকে ১ রানে হারিয়েছে খুলনা বিভাগ। তামিমের পঞ্চাশতম ফিফটিতে চট্টগ্রামের প্রথম জয়।
কুয়াশার কারণে ১৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে দারুণ শুরুর পরও ৯ উইকেটে ১৪৫ রানে থেমে যায় চট্টগ্রামের ইনিংস। জবাবে তৌফিক ছাড়া আর কেউই দায়িত্ব নিতে না পারায় ৪ বল বাকি থাকতে ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় সিলেট।
দুই ম্যাচে চট্টগ্রামের এটি প্রথম জয়। সিলেট হারল দুই ম্যাচেই।
প্রায় ৭ মাস পর মাঠে ফেরা তামিম প্রথম ম্যাচে গত বুধবার ১০ বলে ১৩ রান করে আউট হয়ে যান। তবে পরেরটিতেই তিনি মেলে ধরলেন সেরা সময়ের প্রতিচ্ছবি। ৮ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ৩৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে তিনিই জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। পরে তামিমকেও ছাপিয়ে যান তৌফিক। ৭ চারের সঙ্গে ৬ ছক্কায় মাত্র ৩৬ বলে ৭৬ রান করেন সিলেট ওপেনার। কিন্তু দলের আর কেউ ১৫ রানও করতে পারেনি।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রামের ইনিংসে ছিল পরিষ্কার দুটি ভাগ। প্রথম ৮ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে তারা করে ৯৮ রান। পরে বাকি ৭ ওভারে আরো ৮ উইকেটে তাদের স্কোরে যোগ হয় মাত্র ৪৭ রান।
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চমৎকার শুরু এনে দেন মাহমুদুল হাসান জয় ও তামিম। প্রথম ওভারেই ছক্কা ও চার মারেন জয়। পরে সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে কাভার ড্রাইভে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেন তামিম।
আবু জায়েদ চৌধুরীর বলে দুই চারের সঙ্গে ছক্কা মারেন জয়। ইবাদত হোসেন চৌধুরীর ওভারে তামিম মারেন তিনটি চার। এরপর জয়কে দর্শক বানিয়ে এগিয়ে যান তামিম। আবু জায়েদের ওভারে দুটি চারের পর নাঈম আহমেদের বলে মারেন ছক্কা ও চার। ১৭ বলে ২৯ রান করা জয়কে সপ্তম ওভারে ফেরান ইবাদত। ৮০ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
পরের ওভারে পুল করে চার মেরে ২৭ বলে পঞ্চাশতম পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তামিম। মাহফুজুর রহমান রাব্বির পরের দুই বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে তিনি ওড়ান ছক্কায়।
দলের একশ’ পার হওয়ার পর তোফায়েল আহমেদের বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় ফেরেন তামিম। এরপর বাকিদের ব্যর্থতায় কাঙ্ক্ষিত গতি পায়নি চট্টগ্রামের ইনিংস।
রান তাড়ায় সিলেট বিপাকে পড়ে যায় দ্রুতই। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা জিসান আলম, অমিত হাসান ও আসাদুল্লাহ আল গালিব।
তৃতীয় উইকেটে ওয়াসিফ আকবরকে নিয়ে ৪২ বলে ৭৯ রান যোগ করেন তৌফিক। যেখানে ওয়াসিফের অবদান ১৭ বলে ১৩ রান।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে যাত্রা শুরু করেন তৌফিক। তৃতীয় ওভারে হাসান মুরাদের বলে চারের পর মারেন দুটি ছক্কা। পরের ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে চার ও ছক্কা।
পঞ্চম ওভারে আহমেদ শরিফের বলে ছক্কা ও চারে মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করেন তিনি। এ সংস্করণে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এর চেয়ে কম বলে ফিফটি আছে শুধু শুভাগত হোম (১৬) ও লিটন কুমার দাসের (১৮)।
১১তম ওভারে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে চট্টগ্রামের জয় প্রায় নিশ্চিত করে দেন নাঈম। পরে বাকি কাজ সারতে বেগ পেতে হয়নি শরিফ-ইফরানদের
"