ক্রীড়া প্রতিবেদক
মাঠে নেমে ব্যর্থ তামিম
জিশানের সেঞ্চুরি ম্লান করে জিতল ঢাকা
৫২ বলে সেঞ্চুরি, ১০ ছক্কার ৫টিই টানা ৫ বলে তবু হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো জিশান আলমকে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ জাতীয় ক্রিকেট লিগের টি-টোয়েন্টি সংস্করণের প্রথমদিনে জিশানের সিলেট হেরে গেছে ঢাকা বিভাগের কাছে। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে শেষ বলে ছক্কা মেরে ঢাকাকে জিতিয়েছেন শুভাগত হোম। সিলেটের ২০৫ রান ৬ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়েছে দলটি। পাশের মাঠে সকালের অন্য ম্যাচে বরিশালকে ৩১ রানে হারিয়েছে ঢাকা মহানগর। শেষ বলে ৫ রান দরকার ছিল ঢাকার। যার অর্থ ছক্কা মারতেই হবে। পেসার তোফায়েল আহমেদের করা বলটিকে লং অফ দিয়ে উড়িয়ে সীমানাছাড়া করে সেই প্রয়োজন মেটান শুভাগত। এ অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শেষের নায়ক হলেও ঢাকার জয়ের ভিত গড়েন তরুণ আরিফুল ইসলাম। তিনে নামা আরিফুল ৪৬ বলে ৮ ছক্কায় ৯৪ রান করে ম্লান করে দেন জিশানের অসাধারণ সেঞ্চুরিকে। ম্যাচসেরাও হয়েছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক এ খেলোয়াড়।
দল ২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নামা আরিফুল তৃতীয় ওভারে মারেন প্রথম ছক্কা। সিলেটের পেসার রেজাউর রহমানের করা পঞ্চম ওভারে ৩টি বিশাল ছক্কায় ২২ রান তোলেন আরিফুল। পরে ১১তম ওভারে তোফায়েলকেও ৩টি ছক্কা মারা আরিফুল তৃতীয় উইকেটে আরাফাত সানি জুনিয়রকে নিয়ে ৪৩ বলে ৮৩ রানের জুটি গড়েন। ১৮ বলে ২৭ করেন আরাফাত। ১৩তম ওভারে সেঞ্চুরি থেকে ৬ রান দূরে থেকে আরিফুল যখন ফেরেন, ৪৪ বলে ৬৬ রান দরকার ঢাকা বিভাগের। মাহিদুল ইসলামকে নিয়ে কাজটা শেষ করেন শুভাগত। শুভাগত অবশ্য ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছেন। ১৯তম ওভারে ক্যাচ দিয়েও খালেদ আহমেদের ‘নো’ বলের সৌজন্যে বেঁচে যান তিনি। টিভি রিপ্লে দেখে বুক সমান উচ্চতার বলটিকে নো বল ঘোষণা করা হয়।
শেষ ওভারে শুভাগতদের দরকার ছিল ১২ রান। প্রথম ৫ বলে ৭ রান তুলতে পারেন তারা। তাতেই শেষ বলে ৫ রানের সমীকরণের সামনে পড়েন শুভাগত। ১৮ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩১ রান করেছেন শুভাগত। ২৩ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত ছিলেন মাহিদুল। পাশের একাডেমি মাঠে দুই ওপেনারের ফিফটিতে ভর করে ৪ উইকেটে ১৯২ রান করে ঢাকা মহানগর। রান তাড়ায় ৮ উইকেটে ১৬১ রান করতে পেরেছে বরিশাল। মহানগরের দুই ওপেনার ইমরানউজ্জামান (৩৩ বলে ৫৩) ও মোহাম্মদ নাঈম (৩৫ বলে ৬৫) ১১ ওভারে দলকে এনে দেন ১১৯ রান। দুজনই মেরেছেন ৪টি করে ছক্কা। রান তাড়ায় বরিশালের ৫২ বলে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন ফজলে রাব্বি। মহানগরের বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান পেয়েছেন ৩ উইকেট। রাকিবুল ৩টি উইকেটই নিয়েছেন শেষ ওভারে প্রথম ৪ বলের মধ্যে।
এদিকে তামিম ইকবাল সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন গত মার্চের ১ তারিখ বিপিএলের ফাইনালে। ৮ মাস পর আবার ২০ ওভারের সংস্করণে ফেরাটা সুখকর হলো না তার। জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টিতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন সাবেক জাতীয় দলের অধিনায়ক। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল বুধবার দুপুরে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে খেলতে নামেন তামিম। ১০ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ১৩ রান করে তিনি বোল্ড হয়ে যান অফ স্পিনার এনামুল হকের বলে। তামিমের ব্যর্থতার দিনে তার দলও বড় স্কোর করতে পারেনি। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩২ রান করেছে চট্টগ্রাম। তামিমদের অল্প রানে আটকাতে ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। চট্টগ্রাম দলের হয়ে ২১ বলে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছেন মুমিনুল হক। সাবেক টেস্ট অধিনায়ক এবার বিপিএলে দল পাননি, জাতীয় লিগের এ টি-টোয়েন্টি আসর তার ফেরার পথ করতে পারে।
এদিন মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে টস হেরে ব্যাট করতে নামেন তামিম। জয় ভালো শুরু করলেও তৃতীয় ওভারে তামিমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে ফিরে যান ১২ বলে ১৪ রান করে। তামিম ফেরেন পঞ্চম ওভারে। এনামুলের বলে সামনের পা এগিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান বাঁহাতি ওপেনার। অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন না তামিম। টি-টোয়েন্টি সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন। বাকি দুই সংস্করণ খেলা নিয়ে তার স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটের মধ্যে বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) খেলতে দেখা যায় তাকে। গত মে মাসে সর্বশেষ খেলেছিলেন প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ। এরপর আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দেখা যায়নি তাকে। খেলেননি জাতীয় লিগের ৪ দিনের আসরে।
"