ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

কামিন্স-তোপে ভারত ধরাশায়ী

অজিদের বিশাল জয়

৩৩ হাজারের বেশি দর্শক এসেছিলেন গতকাল রবিবার সকালেই। একটু পরের দিকে যারা আসতে চেয়েছিলেন, তাদের নিশ্চয়ই মাথায় হাত। ম্যাচ শেষ করতে যে এক সেশনও সময় নিল না অস্ট্রেলিয়া! তিন অস্ট্রেলিয়ান পেসারের আগুনে বোলিংয়ের সামনে শুধু ইনিংস পরাজয়ই এড়াতে পারল ভারত। অ্যাডিলেইড টেস্টে দুদিন আর এক সেশনেই ভারতকে গুঁড়িয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল অস্ট্রেলিয়া। গতকাল প্রথম সেশনেই ১০ উইকেটে জিতে যায় প্যাট কামিন্সের দল। তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়ার নায়ক কামিন্সই। আগের দিনের দুটির সঙ্গে এদিন আরো ৩ উইকেট যোগ করেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। সাম্প্রতিক সময়ে বল হাতে একটু বিবর্ণ ছিলেন তিনি। এ ইনিংসের আগে সর্বশেষ ১০ ইনিংসে তার উইকেট ছিল মাত্র ১২টি। এ টেস্টে জশ হ্যাজলউড চোটের কারণে না থাকায় নতুন বল নেওয়ার সুযোগ পেয়ে জ্বলে উঠলেন অধিনায়ক। তার প্রাপ্তি ৫৭ রানে ৫ উইকেট।

ম্যাচে কামিন্সের উইকেট ৭টি, মিচেল স্টার্কের ৮টি, স্কট বোল্যান্ডের ৫টি। তিন অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিলেই শিকার করেছেন ভারতের ২০ উইকেট। তবে বোলারদের এমন পারফরম্যান্সের ম্যাচেও ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা ট্রাভিস হেড। ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। ৫ উইকেটে ১২৮ রান নিয়ে শনিবার দিন শেষ করে ভারত। তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়াকে কেউ ভোগাতে পারলে সেটি হতে পারতেন ঋশভ পান্ত। কিন্তু দিনের প্রথম ওভারেই মিচেল স্টার্ক বিদায় করে দেন বিপজ্জনক এ ব্যাটসম্যানকে। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়, ম্যাচ খুব একটা লম্বা হচ্ছে না। আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান নিতিশ কুমার রেড্ডি জীবন পান দুই দফায়। প্রথমটিতে স্টার্কের বলে ক্যাচ নিতে পারেননি স্মিথ, একটু পর কামিন্সের বলে ব্যর্থ হন ট্রাভিস হেড। এর ফাঁকে দারুণ দুটি শর্ট বলে রাভিচান্দ্রান অশ্বিন ও হার্শিত রানাকে ফেরান কামিন্স।

জীবন পেয়ে একটু রোমাঞ্চের পিছু নেন নিতিশ। বোল্যান্ডের বলে বাউন্ডারির পর হুক করে ছক্কা মারেন তিনি কামিন্সের শর্ট বলে। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক পরের বলেই শোধ তোলেন শর্ট বলেই তাকে আউট করে। ৪২ রান করা নিতিশকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূরণ হয় কামিন্সের। টেস্টে এ স্বাদ পেলেন তিনি ত্রয়োদশবার। পরের বলেই ৬ উইকেট হতে পারত তার। কিন্তু উইকেটের পেছনে অ্যালেক্স কেয়ারি পারেননি সিরাজের ক্যাচ নিতে। পরের ওভারে সিরাজকে ফিরিয়েই ভারতীয় ইনিংস শেষ করেন বোল্যান্ড।

প্রথম ইনিংসে তবু ১ ওভার বল করেছিলেন ন্যাথান লায়ন, দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে নিতেই হয়নি তার। ১৩১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এত কম বোলিং আগে কখনোই করেননি এ অফ স্পিনার। সেই ২০১১ সালে ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্টে ৩ ওভার বোলিং করেছিলেন তিনি। রান তাড়ায় ১৯ রানের ছোট্ট লক্ষ্যে দ্রুতই পৌঁছে যান উসমান খাজা ও ন্যাথান ম্যাকসুয়েনি। ধারাভাষ্যকক্ষের অ্যাডাম গিলক্রিস্ট বললেন, ‘পার্থের বিপর্যয়ের পর অস্ট্রেলিয়া দারুণ দাপটেই দেখিয়ে দিল, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়।’ সিরিজের পরের টেস্ট ব্রিজবেনে শুরু শনিবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত প্রথম ইনিংস : ১৮০

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস : ৩৩৭

ভারত দ্বিতীয় ইনিংস : ৩৬.৫ ওভার ১৭৫ (আগের দিন ১২৮/৫) (পান্ত ২৮, নিতিশ ৪২, অশ্বিন ৭, হার্শিত ০, বুমরাহ ২*, সিরাজ ৭; স্টার্ক ৬০/২, কামিন্স ৫৭/৫, বোল্যান্ড ৫১/৩)।

অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস : (লক্ষ্য ১৯) ৩.২ ওভার ১৯/০ (ম্যাকসুয়েনি ১০*, খাজা ৯*; বুমরাহ ২/০, সিরাজ ১৯/০, নিতিশ ৮/০)।

ফল : অস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ : ৫ ম্যাচ সিরিজে দুটিতে ১-১ সমতা।

ম্যাচসেরা : ট্রাভিস হেড।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close