ক্রীড়া ডেস্ক
এমন দিনও দেখতে হলো গার্দিওলকে
বলা হয়, অ্যানফিল্ড প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের নাম। এই মাঠে প্রতিপক্ষের কবর রচনা করা হয়। পেপ গার্দিওলা সেই মাঠেই গতকাল রাতে গিয়েছিলেন বিপ্লবী ‘চে গুয়েভারা’ হতে। ৬ বছর আগে লড়াকু মানসিকতার কারণে তাকে এই বিশেষণে বিশেষায়িত করেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি সিজার লুইস মেনোত্তি। তবে গার্দিওলা এতটাই আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিলেন যে আলাদা করে সেই বিশেষণের সার্থকতা প্রমাণের প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু সেসব দিন যেন গত হয়েছে। গার্দিওলা ভক্তরা এখন তার ‘চে’ হয়ে ওঠার দিকেই পথ চেয়ে আছেন।
গার্দিওলা নিজেও চেয়েছিলেন শীর্ষে থাকা লিভারপুলকে হারিয়ে নতুনভাবে সব শুরু করতে। কিন্তু তার কপালটাই যে খারাপ! ‘বিপ্লব’ শুরুর জন্য এমন একদলকে হারাতে হতো, যারা এই মুহূর্তে শুধু ইংল্যান্ডেই নয়, ইউরোপেরই সেরা দল। এর ফলে অ্যানফিল্ডে যা হওয়ার, তাই হয়েছে। পূরণ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির সর্বনাশের ষোলোকলা। লিভারপুলের মাঠে অসহায় আত্মসমর্পণে সিটি হারল ২-০ গোলে।
যদিও স্কোরলাইন লিভারপুলের দাপটের পুরোটা তুলে ধরতে পারছে না। সুযোগ হাতছাড়া না হলে এবং ভাগ্য আরেকটু প্রসন্ন হলে এই ব্যবধান আরো বড় হতে পারত। তা না হওয়ায় অবশ্য খুব একটা ক্ষতি-বৃদ্ধি হচ্ছে না। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের (১৩ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট) চেয়ে ১১ পয়েন্টে পিছিয়ে সিটির (১৩ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম) শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্নও একরকম শেষই তো হয়ে গেল। অনেকে এর সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন আরেকটি প্রশ্ন- লিভারপুলের অ্যানফিল্ডে গিয়ে সিটির স্বর্ণযুগের কবরও কি রচনা হয়ে গেল?
অনেকেই হয়তো একথা বাড়াবাড়ি ভাবতে পারেন। কিন্তু যা হয়ে গেছে সেটাকেইবা কী বলা যেতে পারে? টানা ৪ প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে হারের পাশাপাশি সব মিলিয়ে শেষ ৭ ম্যাচে ৬ হার। ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে নিজের বাজে পারফরম্যান্সের রেকর্ডকেই যেন প্রতিনিয়ত ছাড়িয়ে যাচ্ছেন গার্দিওলা। পরিস্থিতি এতই খারাপ যে আগের ম্যাচে ৩ গোলে এগিয়ে থেকেও ড্র করার পর গার্দিওলা নিজেই নিজের নাক-মুখ খামচেছেন!
বাজে ছন্দের সঙ্গে গার্দিওলার লাগামহীন কর্মকাণ্ড যেন কোনো বাঁধই মানছে না। গতকালও এমন আচরণ করেছেন, যা মোটেই গার্দিওলাসুলভ ছিল না। অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের কাছে হারের পর স্বাগতিক দর্শকের দুয়োর মুখে পড়তে হয় গার্দিওলাকে। লিভারপুল সমর্থকরা যখন ‘সকালেই (আজ) তুমি ছাঁটাই হবে’ বলে গান ধরেন, তেতে থাকা গার্দিওলা ২ হাতের ৬ আঙুল উঁচিয়ে জবাব দেন লিভারপুল সমর্থকদের। ৬ আঙুল দেখিয়ে প্রিমিয়ার লিগে নিজের ৬ শিরোপা জয়ের কথাই ‘অল রেড’ সমর্থকদের মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন গার্দিওলা। তার মতো একজন কোচের এমন আচরণে বিস্মিত হয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ তার এই আচরণকে ‘মরিনিওসুলভ’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
"